ইন্টারনেটের সুবাদে সারা দুনিয়া যখন মানুষের হাতের মুঠোয় তখন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থাকার পরও প্রয়োজনীয় তথ্য পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা। তথ্য প্রযুক্তির এ যুগেও চাহিদা অনুযায়ী তথ্য দিতে ব্যর্থ হচ্ছে ববির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট।
প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাব নিয়ে শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টরা অসন্তোষ প্রকাশ করছে। প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীর তথ্য জানার অন্যতম মাধ্যম ওয়েবসাইটটিতে নিয়মিত আপডেট না থাকায় শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে হিমশিম খাচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়মিত করা হয় না আপডেট। ফলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নোটিশ, পরীক্ষার রুটিন, রেজাল্ট, ভর্তি সংক্রান্ত তথ্য এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ওয়েবসাইটে পাওয়া যায় না। এমনকি শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল বা একাডেমিক রেকর্ড সংক্রান্ত তথ্যও অনুপস্থিত।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষার জন্য যারা দেশের বাইরে আছেন, তারা ওয়েবসাইট থেকে কোনো হালনাগাদ তথ্য জানতে না পারার অভিযোগ আছে। জানা যায়, অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগকে নোটিশ জানানো হয় চিঠির মাধ্যমে।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে গাদাগাদি করে লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা জমা দেওয়া অশোভন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থাকা সত্ত্বেও সেখানে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ফল প্রকাশ করা হয় না। ডিজিটাল যুগে যেখানে প্রয়োজনীয় সব কিছু ওয়েবসাইটে থাকার কথা সেখানে সবকিছু করা হচ্ছে চিঠির মাধ্যমে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, ডিজিটাল যুগে ‘অ্যানালগ’ ওয়েবসাইট।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, পরীক্ষার রুটিন, রেজাল্ট বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায় না ওয়েবসাইটিতে। ফলে তথ্যের অপ্রতুলতা তাদের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে বাধার সৃষ্টি করছে। অনেক সময় নোটিশ বা তথ্য বাহিরে প্রকাশ পেলেও তা ওয়েবসাইটে আপডেট করা হয় না। এর ফলে শিক্ষার্থীদেরকে বিভিন্ন বিভাগ বা অফিসে ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করতে হয়, যা সময়সাপেক্ষ ও কষ্টদায়ক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নেটওয়ার্কিং ও আইটি অফিসের পরিচালক ড. মো. মঞ্জুর আহমেদ বলেন, রেজিস্ট্রার অফিস বা যেকোনো দপ্তর থেকে যখন কোনো নোটিশ বা চিঠি আমাদের কাছে পাঠানো হয়, তখনই আমরা সেটি ওয়েবসাইটে আপলোড করে দেই। তবে এটি করার জন্য আমাদেরকে অবশ্যই অথোরাইজেশন লেটার বা অনুমোদনপত্র প্রয়োজন হয়। যদি অনুমোদন পত্র না আসে, তাহলে নোটিশটি আপলোড করি না। শুধুমাত্র সেই নোটিশগুলোই আপলোড করি, যেগুলো আপলোড করার জন্য আমাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে সব ধরনের নোটিশ আমাদের কাছে পাঠানো হয় না। শুধুমাত্র শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য সহজলভ্য গুরুত্বপূর্ণ নোটিশগুলোই আমাদের কাছে পাঠানো হয়।
ওয়েবসাইটে শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল বলতে মূলত পরীক্ষা সফটওয়ারে প্রোফাইল প্রফাইল রয়েছে। এই প্রোফাইলগুলো পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে সংরক্ষিত আছে। এটা সাধারণত শিক্ষা-সম্পর্কিত তথ্য ধারণ করে। সাধারণত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল আলাদাভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই। স্টুডেন্ট প্রোফাইল বলতে সাধারণত টিচিং অ্যান্ড লার্নিং মডিউলকে বোঝায়, যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের লার্নিং মডিউল দেখতে পারে, শিক্ষকরা কোনো কন্টেন্ট আপলোড করেন বা অনলাইনে এসাইনমেন্ট জমা নেওয়ার ব্যবস্থা থাকে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সুবিধাটি এখনও চালু নেই। বাংলাদেশের অল্প কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে। আমাদেরও এই বিষয়ে পরিকল্পনা আছে এবং অচিরেই আমরা এ নিয়ে কাজ শুরু করব।
আপনার মতামত লিখুন :