জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আইন ও বিচার বিভাগের ৫ম ব্যাচের (৪৫তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী আবিদুল হুদার পরিবারের ওপর বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলা এবং তার বাবার হত্যার বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেছে জাবির আইন অনুষদ।
রোববার (১৬ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রবিউল ইসলাম।
মানববন্ধনে আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান আসাদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে এই বর্বোরোচিত হামলার এবং নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। একইসাথে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান মানববন্ধনে উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যেন এমন হৃদয়বিদারক ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
আবিদুলের সহপাঠী আইন অনুষদের সাবেক শিক্ষার্থী মুহসিন বিল্লাহ বলেন, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে গত ১৪ মার্চ তার পরিবারের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালানো হয় এবং এই হামলায় তার পিতা গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। একইসাথে এ হামলার ঘটনায় যেসকল সন্ত্রাসী জড়িত তাদেরকে দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি জানাচ্ছি।
জাবি আইন শিক্ষার্থী সংসদের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেক্রেটারি মুর্তজা সাকিব বলেন, আবিদুল ভাইয়ের পিতার নৃশংস হত্যা এবং তার পরিবারের ওপর বর্বরোচিত হামলার নিন্দা জানাচ্ছি। সেইসাথে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, এই হামলার সঙ্গে যারা জড়িয়ে তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা হোক।
জাবি কক্সবাজার স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বোরহান রব্বানী বলেন, জুলাই আন্দোলনে আবিদুল হুদা ভাইয়ের ছোট ভাই কক্সবাজারে সম্মুখ সারিতে থেকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। সেই থেকেই স্থানীয় আওয়ামী দোসররা তাদের পরিবারকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় শেষ পর্যন্ত সন্ত্রাসীরা আবিদুল হুদা ভাইয়ের বাবাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং পরিবারের একাধিক সদস্যকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। আমরা এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারপূর্বক আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাই।
আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রবিউল ইসলাম বলেন, সাবেক শিক্ষার্থী আবিদুল হুদার পরিবারের ওপর নৃশংস হামলা ও তার বাবাকে বর্বরোচিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। নির্বাহী বিভাগ থেকে দোষ চাপানো হচ্ছে যে এটি জমিজমা সংক্রান্ত কিন্তু যা সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল রাজ্জাক ৪০ জনের মতো মানুষ নিয়ে তাদের ওপর হামলা করেন। সংশ্লিষ্ট থানার ওসি ঘটনাটি জানলেও যথা সময়ে উপস্থিত হননি। পুলিশের গড়িমসির কারণেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের পক্ষ থেকে বলতে চাই এই ঘটনার দ্রুত বিচার নিশ্চিত না হলে এর থেকেও কঠোর আন্দোলন করব।
উল্লেখ্য, গত ১৪ মার্চ রাতে কক্সবাজারের নিজ এলাকায় স্থানীয় চেয়ারম্যানের মদদে স্বপরিবারে হামলার শিকার হন আবিদুল হুদা। এ হামলায় তার পিতা গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
আপনার মতামত লিখুন :