সিলেটগামী যাত্রীবাহী এক চলন্ত বাসের সুপারভাইজর দ্বারা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) এক ছাত্রী হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার রাতে ঢাকা-সিলেটে মহাসড়কের নবীগঞ্জ এলাকায় প্যারাডাইস এক্সপ্রেস নামক বাসের স্লিপার কোচে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি। এ ঘটনায় সিলেটের হুমায়ুন রশিদ চত্বর বাসস্ট্যান্ড থেকে বুধবার সকালে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ।
অভিযুক্ত ব্যক্তি মো. মাইন উদ্দিন (২১) প্যারাডাইস এক্সপ্রেস বাসের কর্মরত সুপারভাইজর। তিনি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানার বাটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বলে জানায় থানা পুলিশ।
অন্যদিকে, ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, ‘গত সোমবার রাতে আমার আরেক সহপাঠী অসুস্থ থাকায় তাকে সিলেট থেকে ঢাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাই। ওই সহপাঠীর অপারেশন শেষে আমি ও আমার আরেক সহপাঠী মঙ্গলবার রাতে প্যারাডাইস বাসের স্লিপিং কোচে সিলেটে ফেরার উদ্দেশে রওনা দিই। বাসটি কিশোরগঞ্জ পার হলে আমি ঘুমিয়ে যাই। আমার সহপাঠী আমার ওপরের দিকের একটি স্লিপিং কোচে ঘুমিয়ে ছিলেন। তখন বাসের বাতি বন্ধ ছিল। এর মধ্যে বাসটি যখন শেরপুরের কাছাকাছি আসে, তখন আমার হঠাৎ ঘুম ভাঙলে দেখি সাদা পোশাকধারী কেউ আমাকে জড়িয়ে ধরে আছেন। চিৎকার দিলে সেই ব্যক্তি দৌড়ে সেখান থেকে চলে যান। আমার বর্ণনা অনুযায়ী সঙ্গে সঙ্গে সহপাঠী ও বাসের যাত্রীরা মিলে তত্ত্বাবধায়ককে গাড়ির পেছনের সিটে আটক রাখেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আজিজুল বাতেন বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে প্যারাডাইস এক্সপ্রেসের স্লিপার কোচ বাসে ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে সে। পথে আসার সময় বাসের মধ্যে বাস সুপারভাইজর কর্তৃক হেনস্তার শিকার হন তিনি। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী সিলেটের হুমায়ুন রশীদ চত্বরে গিয়ে বাস থামিয়ে সুপারভাইজরকে আটক করেন। পরে হেনস্তার শিকার শিক্ষার্থীর বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্তকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করবে।’
দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি কামরুল হাসান তালুকদার বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে এখনো কোনো মামলা হয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’