ঢাকা শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ববিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে পহেলা বৈশাখ উদযাপন

ববি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৪, ২০২৫, ০১:৩৫ পিএম
ববিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে পহেলা বৈশাখ উদযাপন
ববিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে পহেলা বৈশাখ উদযাপন, ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

রক্তরাঙা সূর্য যখন নতুন বছরের প্রথম সকালের আকাশ ছুঁয়ে উঠে এলো, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস তখন ছিল অনন্য এক প্রতিজ্ঞার রঙে রাঙানো। এটা ছিল পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ ১৪৩২। কিন্তু এবার বৈশাখ শুধুই উৎসবের নাম নয়, ছিল এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষ্য, এক নবযাত্রার আরম্ভ।

দেশজুড়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এটিই ছিল প্রথম বৈশাখ। তাই শুধু বৈশাখী সাজ নয়, বরং সারা বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল গণজাগরণ, আশা আর মুক্তির আবেগ। এবারের প্রতিপাদ্যই ছিল সময়ের ডাক ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।

নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে সোমবার (১৪ এপ্রিল) বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য প্রফেসর ড. শুচিতা শরমিনের নেতৃত্বে শোভাযাত্রায় উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।

শোভাযাত্রাটি প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক হয়ে পুনরায় ক্যাম্পাসে এসে শেষ হয়।

শোভাযাত্রা শেষে উপাচার্য সকলকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ বৈচিত্রের দেশ। আমাদের সংস্কৃতির মধ্যে অনেক বৈচিত্র রয়েছে। সকল বৈচিত্রের মাঝে বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে আমরা সকলে সমবেত থাকতে চাই, ঐক্যবদ্ধ থাকতে চাই। বাংলা নববর্ষ বাংলাদেশের ঐতিহ্য। এটা আমাদেরকে আরও সংহত করবে। এ সময় উপাচার্য মহোদয় নতুন বছরে সকলে মিলে একসঙ্গে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এদিকে পহেলা বৈশাখের ঐতিহ্য অনুযায়ী, পান্তা-ইলিশ ছিল সাধারণত অপরিহার্য খাবার। তবে, এবার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছিল। মা ইলিশ ধরা বন্ধ থাকার কারণে পরিবেশবান্ধব চিন্তাভাবনায় ইলিশের পরিবর্তে দেশীয় মাছ রুই পরিবেশন করা হয়। এটা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের পক্ষ থেকে একটি পরিবেশ সচেতন সিদ্ধান্ত, যাতে প্রকৃতির প্রতি দায়বদ্ধতা ও মাছের প্রজনন মৌসুমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এবারের পহেলা বৈশাখ উদযাপনকে কেন্দ্র করে বর্ণাঢ্য র‌্যালি আয়োজন করেছিল, যেখানে শিক্ষার্থীরা হাতে কুলা, তালপাতার হাতপাখা, বাঁশি নিয়ে অংশ নেন।

এ ছাড়া, র‌্যালির ফেস্টুনে দেখা যায় নতুন বাংলা, নতুন আশার সুর। এ র‌্যালি ছিল এক ধরনের চেতনার মিছিল, যা বাঙালির সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং স্বাধীনতা রক্ষার উদ্দেশ্যে আয়োজন করা হয়েছিল।