অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীনকে স্বপদে বহাল অর্থাৎ সিন্ডিকেট সদস্য পদে বহাল রাখতে ২৪ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। এ ছাড়া চার দফা দাবি নিয়ে প্রতিবাদী সমাবেশ করেন তারা।
সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুর ১টায় ফ্যাসিবাদবিরোধী সংঘের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-১-এর নিচতলায় এ প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন, একই বিভাগের ইনামুক হক হৃদয়, মো. তারিক হোসেন, আতিক আব্দুল্লাহ।
তারা বলেন, নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগে দণ্ডপ্রাপ্ত ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামকে অপসারণ করা হয়নি।
‘অথচ জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে থাকা একমাত্র অধ্যাপককে কোনো কারণ ছাড়ায় সিন্ডিকেট সদস্য থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এটি উপাচার্যের স্বেচ্ছাচারিতা ও উদ্দেশ্যমূলক কাজ।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিন জুলাই আন্দোলনে চেতনা ধারণ না করে বরং ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন করছেন বলে অভিযোগ তোলেন তারা।
চার দফা দাবি উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, জুলাই বিপ্লবের সাহসী সহযোদ্ধা ড. মো. মুহসিন উদ্দীনের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা ও অপমানজনক অভিযোগ প্রত্যাহার করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে এবং তাঁকে পুনর্বহাল করতে হবে।
‘ভোলার মনিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. মনিরুল ইসলামকে রেজিস্ট্রার পদ থেকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।’
‘ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের দোসর—জুলাই গণহত্যার সমর্থক, চাটুকার ও প্রশাসনিক সুবিধাভোগী শিক্ষক-কর্মচারীদের সব প্রশাসনিক ও লাভজনক কমিটি থেকে অপসারণ নিশ্চিত করতে হবে।’-বলেন তারা।
তারা আরও বলেন, ‘দৃশ্যমান উন্নয়ন না করা, একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মানহানির বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের একনিষ্ঠ দোসরদের পুনর্বাসন করে প্রথম স্বাধীন বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ধ্বংস করার দায় নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।’
সিন্ডিকেট সদস্য থেকে বাদ দেওয়ার ব্যাপারে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী বলেন, ‘একজন সিন্ডিকেট সদস্যকে অব্যাহতি দিতে হলে যে প্রক্রিয়ায় হওয়া দরকার তা করা হয়নি।’
‘এ জন্য অধ্যাপক ড. মুহসিনকে বাদ দেওয়া বিধি সম্মত হয়নি। একাডেমিক সদস্য বা সিন্ডিকেট সদস্যকে বাদ দিতে হলে মিটিং ডাকতে হয়। সেটি উপাচার্য করেননি।’
‘গুরুতর অভিযোগ ছাড়া এককভাবে বাদ দেওয়া ঠিক না। কোনো বিশ্ববিদ্যালয় এককভাবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে আমার জানা নেই।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিন বলেন, ‘বিগত দিনে অধ্যাপক মুহসিন উদ্দীনের বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ড দেখেছি। তাঁর বিতর্কিত কর্মকাণ্ড পত্রপত্রিকায়ও দেখেছি, যা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল তৈরি করেছে।’
‘শৃঙ্খলা ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মেনেই তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’
‘পরে সিন্ডিকেট সভায় এটি অবহিত করা হবে। শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরে ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি হোক সেটিই প্রত্যাশা।’
প্রতিবাদী সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, ইংরেজি বিভাগের প্রীতম ঘোষাল, মশিউর রহমান রনি, ফুরকান,খালিদ হাসান, মোজাহিদ, মুকুল আহমেদ, তামিম ইকবাল রাজু ও রহমত প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :