ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫

কুয়েটে চলছে অনশন, দাবি আদায়ে অনড় শিক্ষার্থীরা

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২২, ২০২৫, ১১:৩৮ এএম
ছবি: সংগৃহীত

উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাছুদের অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থী। সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেল ৪টা থেকে ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা।

সর্বশেষ মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বেলা ১১টায় ২৯ জন শিক্ষার্থী অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। এর আগে সোমবার বিকেল ৪টায় পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ৩২ জন শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে অংশ নেয়। এর মধ্যে দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। আরও একজন মায়ের অসুস্থতাজনিত কারণে বাড়িতে ফিরে গেছেন।

ওয়েলফেয়ার সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থী মেঝেতে তোষক বিছিয়ে কেউ বসে আছেন, কেউ শুয়ে আছেন। পাশে কয়েকটি স্ট্যান্ড ফ্যান রয়েছে। রাতে কিছু খাননি বলে জানান তারা। তাদের পাশে সেন্টারের সামনে কুয়েটের একটি অ্যাম্বুলেন্স রাখা আছে।

অনশনরত শিক্ষার্থী রাহাত, তৌফিক, গালিব, মহিবুজ্জামান উপল ও ওবায়দুল্লাহ বলেন, উপাচার্যকে অপসারণ না করা পর্যন্ত তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। প্রয়োজনে জীবন দেবেন। প্রশ্ন রেখে তারা বলেন, ‘৩২ জন শিক্ষার্থীর জীবনের চেয়ে কি উপাচার্যের চেয়ার বড়?’

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার সকালে আবারও শিক্ষার্থীদের আমরণ কর্মসূচি থেকে সরে এসে আলোচনায় বসার আহ্বান জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক ড. মো. আব্দুল্লাহ ইলিয়াস অনশনস্থলে এসে ছাত্রদের খোঁজখবর নিয়েছেন।

এর আগে, সোমবার বেলা আড়াইটায় ছাত্রকল্যাণ পরিচালক, সহকারী পরিচালক, ডেপুটি পরিচালকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুলসংখ্যক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পূর্বনির্ধারিত অনশনস্থল স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় অবস্থান নেন। টানা আড়াই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়েও শিক্ষার্থীদের নমনীয় করতে না পেরে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালকসহ শিক্ষকরা সেখান থেকে চলে যান। 

শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও বহিরাগতরা হামলা করলেও কুয়েট প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। হামলাকারীদের নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাত পরিচয় লোকজনের বিরুদ্ধে দায়সারা একটি মামলা করেছে কুয়েট প্রশাসন। হামলার ঘটনায় এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।

তারা বলেন, অন্যদিকে কিছুদিন আগে বহিরাগত একজন বাদী হয়ে ২২ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। কুয়েট কর্তৃপক্ষ ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। এর মধ্যে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীও রয়েছে। উপাচার্যের কাছে বারবার দাবি জানালেও তিনি শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করেননি।

শিক্ষার্থীরা জানান, তারা গত ১৩ এপ্রিল ক্যাম্পাসে ঢুকে হল খুলে দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। তারপর দুই রাত খোলা আকাশের নিচে থাকার পর ১৫ এপ্রিল তালা ভেঙে হলে ঢোকেন তারা। কিন্তু হলে খাবার, পানি ও ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের কেউ তাদের দাবি পূরণের উদ্যোগ নেয়নি। তাই তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনে বাধ্য হয়েছেন।

কুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার জানান, আমরা শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনঢ় রয়েছেন। আবারও শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে কর্মসূচি প্রত্যাহার করার ব্যাপারে কথা বলব।