ঢাকা শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বহির্বিশ্বের মদদে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে

সজিব আহমদ সায়ান (ঢাবি)

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৪, ০৭:৫০ পিএম

বহির্বিশ্বের মদদে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে

ছবি, রূপালী বাংলাদেশ

ঢাবি: আমেরিকা ও ভারতের যৌথ মদদে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‍‍`স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি‍‍`।  শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে চারটায় ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে এমন মন্তব্য করেছেন সংগঠনটির আহ্বায়ক মুহম্মদ জিয়াউল হক।

পাবত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করতে দেশবিরোধী উপজাতি-বিদেশী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এবং দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় ৭ দফা দাবীতে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট শেখ ওমর বলেন, ২৪‍‍`র গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শক্তিশালী বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনের যে অনন্য সুযোগ তৈরি হয়েছে, সেটাকে নস্যাৎ করার জন্য দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে তাদের পুরনো চক্রান্ত বাস্তবায়নে আবার নতুন করে মাঠে নেমেছে। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে বসবাসরত চাকমা ও ত্রিপুরা নেতারা বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে হস্তক্ষেপ করতে মোদির কাছে চিঠি লিখেছে। এদিকে, সাম্প্রতিক উত্তপ্ত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশে মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফেভ চারদিন আগে বাংলাদেশ সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার সাথে দেখা করে তথাকথিত "আদিবাসী" সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের সমর্থন ঘোষণা করেছে। ঢাকার মার্কিন দূতাবাস ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বলেছে, তারা "আদিবাসী সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং জাতীয় পরিচয়ে তাদের অমূল্য অবদানকে" স্বীকৃতি দেয়। সুতরাং, বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামকে ঘিরে মার্কিন-ভারতের ষড়যন্ত্র খুবই স্পষ্ট।

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে ঘিরে মার্কিন-ভারতের ষড়যন্ত্র-সহ সকল দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকে বাংলাদেশের মুক্তিকামী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে প্রতিহত করবে।

ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদ বলেন, যারা বাংলাদেশকে লালল করবে তরাই বাংলাদেশের নাগরিক ও সাংবিধানিক সুবিধা পাবে। যারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে ধারণ করবে না তাদের সাথে আমরা নেই।

তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ খুব অমায়িক। কিন্তু কিছু সন্ত্রাসী সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। তারা নিরীহ মানুষকে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বাংলাদেশের সরকারকে আহ্বান জানান যারা বাংলাদেশকে খণ্ডিত করতে চায় তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে এবং পাহাড়ে বিশৃঙ্খলা মোকাবেলা করতে প্রয়োজনে সেনা ক্যাম্প বৃদ্ধি করতে।

সমাবেশে ‍‍`স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি‍‍`র আহবায়ক মুহম্মদ জিয়াউল হক সরকারের নিকট ৭ দফা দাবী তুলে ধরেন-

১. বাংলাদেশের উপজাতিদের সম্বোধনের ক্ষেত্রে আদিবাসী ও জুম্ম শব্দ ব্যবহার এবং বাংলাদেশের বাঙ্গালীদের সম্বোধনে সেটেলার শব্দ ব্যবহারকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা ঘোষণা করতে হবে। যারা এসব শব্দ ব্যবহার করে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে। 
২. বাংলাদেশের অখণ্ডতা রক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি-১৯০০ বাতিল করে দেশের সব অঞ্চলে সবার জন্য একই আইন প্রচলন ও কার্যকর করতে হবে।
৩. সরকারী চাকুরিতে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপজাতি কোটা বাতিল করতে হবে। কারণ, পাহাড়ের বাঙ্গালীদের বাদ দিয়ে উপজাতিদের জন্য কোটা রাখা মারাত্বক রকমের বৈষম্য। 
৪. ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অবশ্যই নিরপেক্ষ ও ভারসাম্যমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে।
৫. পার্বত্য সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
৬. পার্বত্য অঞ্চলে চলমান অস্থিতিশীলতা নিরসন, সন্ত্রাস দমন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যাক সেনাক্যাম্প বাড়াতে হবে।
৭. ১৯৯৭ সালের চুক্তি অনুযায়ী উপজাতি কর্তৃক সশস্ত্র কার্যক্রম বন্ধ না করায় সংবিধানবিরোধী পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাতিল করতে হবে।

আরবি/এস

Link copied!