ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

‘আদিবাসী’ দাবী করা মানে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করা

ঢাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৪, ০৫:২০ পিএম

‘আদিবাসী’ দাবী করা মানে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করা

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: উপজাতিদের ‘আদিবাসী’ দাবী করা কিংবা সম্বোধন করা মানে, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করা বলে মন্তব্য করেছেন স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি‍‍` প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক মুহম্মদ জিয়াউল হক।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ বা ‘সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শিক্ষার্থীসমাজ’ এর ব্যানারে এক প্রতিবাদী সমাবেশে এ মন্তব্য করেন তিনি।

সমাবেশে ভারতীয় উস্কানীতে পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিতিশীলতা তৈরি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা রাষ্ট্র তৈরীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষার্থীরা। ‍‍`আমাদের পাহাড়ে চোখ দিলে তোমার মুরগীর গলা (চিকেনস নেক) চেপে ধরবো‍‍` বলে হুশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।

সমাবেশে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি‍‍` প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মুহম্মদ জিয়াউল হক বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে জুম্মল্যান্ড বানাতে ভারতীয় মদদে উপজাতিদের ‘আদিবাসী’ বলে জোর প্রচারণা চলছে। উপজাতিদের উস্কানি দেয়া হচ্ছে ‍‍`আদিবাসী‍‍` স্বীকৃতি আদায়ের জন্য। অথচ পাহাড়ের উপজাতিরা কেউ আদিবাসী নয়, তারা অভিবাসী। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রয়োজনে ভারত, মায়ানমার ও তিব্বত থেকে বাংলাদেশে অভিবাসন করে এসেছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ দখলদার, যারা দস্যুবৃত্তি করতে করতে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রবেশ করে জোর করে বাঙ্গালীদেরকে ভূমিচ্যূত করে দখলদারিত্ব চালিয়েছে। আবার কেউ বা আশপাশের অঞ্চল থেকে নিপীড়নের শিকার হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে আশ্রয় গ্রহণ করেছে। উপজাতি বা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের এই উভয় শ্রেণি-ই বাংলাদেশের আদিম কিংবা প্রকৃত অধিবাসী নয়। তাদেরকে ‍‍`আদিবাসী‍‍` বলে প্রচার করা মানে একটি ঐতিহাসিক ও নৃতাত্ত্বিক সত্যকে অস্বীকার করা। আর এই প্রচারণার পেছনে ভারত, মিশনারি ও বিভিন্ন দেশি-বিদেশি এনজিওর মদদ রয়েছে।

কারণ আদিবাসী স্বীকৃতি আদায় করতে পারলে আইএলও কনভেনশন কিংবা জাতিসংঘের ২০০৭ সালের কনভেনশন অনুযায়ী ‍‍`রাইট টু সেলফ ডিটারমিনেশন‍‍` বা স্বায়ত্তশাসন, আলাদা জাতীয়তা, আলাদা ভূমির মালিকানা ও সর্বশেষ স্বাধীনতার দাবিকে আইনগত বৈধতা দেওয়ার পথ খুলে যাবে। অথচ বাংলাদেশের উপজাতিরা কেউ-ই আদিবাসী নয়।

তিনি আরও বলেন, উপজাতিদের ‘আদিবাসী’ দাবী করা কিংবা সম্বোধন করা মানে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করা। যা অবশ্যই রাষ্ট্রদ্রোহিতা। বাংলাদেশের কেউ যদি এমন প্রচারণায় অংশ নেয় তাহলে সে অবশ্যই রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধে অপরাধী হবে। তাকে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে।

স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি‍‍` প্ল্যাটফর্মের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি মশিউর রহমান বলেন, পাহাড়ে খ্রিস্টান মিশনারীরা একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। তারা উপজাতি গোষ্ঠীগুলোকে খ্রিষ্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত করে পাহাড়ে খ্রিষ্টান ধর্মের আধিক্য দেখাতে চায়। এর সাথে বেশ কিছু এনজিও রয়েছে যারা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদেরকে ‍‍`আদিবাসী‍‍` প্রচারণার সবক দিয়ে থাকে। উপজাতিদেরকে আদিবাসী স্বীকৃতির জন্য উস্কানিও দেয়। তাদের উদ্দেশ্য পাহাড়কে খ্রিষ্টান অধ্যুষিত দক্ষিণ সুদান বা পূর্ব তীমুরের মত আলাদা রাষ্ট্র তৈরি করা। রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমের দায়ে পাহাড়ে সর্ব প্রকার মিশনারী ও এনজিও কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবী তুলেন মশিউর রহমান।

মশিউর বলেন, সিএইচটি কমিশন নামক একটি সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ে রাষ্ট্রদ্রোহী কার্যক্রমে লিপ্ত। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের অধিকার রক্ষার নামে যারা বাংলাদেশের পাহাড়কে দক্ষিণ সুদান বা পূর্ব তীমুর বানাতে চায়। এই সংগঠনের অন্যতম সদস্য ড. জাফর ইকবাল এবং তার স্ত্রী ইয়াসমিন হক। মশিউর রহমান রাষ্ট্রদ্রোহী কার্যক্রমের জন্য জাফর ইকবালসহ সিএইচটি কমিশনের সকল সদস্যের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবী করেন।

আরবি/ এইচএম

Link copied!