কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) পরিবারের সদস্যদের মাসিক মেডিকেল বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে মাত্র ছয় টাকা। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ২৬৬ শিক্ষক, ৬৯২৪ জন শিক্ষার্থী, ১০৫ কর্মকর্তা ও ২০৪ কর্মচারী রয়েছে। তাদের জন্য ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেট ধরা হয়েছে ৬ লাখ টাকা। এতে চিকিৎসা বাবদ মাসিক জনপ্রতি পায় ৬ টাকা । ফলে মেডিকেলের প্রকৃত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের সদস্যদের যথাসাধ্য চিকিৎসা সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল প্রধান ডা. মাহমুদুল হাসান খান।
মেডিকেল ও অর্থ দপ্তরের সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে মেডিকেল সেন্টারের জন্য ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এরমধ্যে ২ লাখ টাকা চলে যায় ইন্সট্রুমেন্ট কেনা ও মেরামতের জন্য, বাকি ৪ লাখ ওষুধের জন্য। তবে ওষুধ কেনার জন্য প্রতি মাসে উত্তোলন করা যায় ২৫ হাজার টাকা। এতেই মেডিকেলের ভ্যাট দিতে হয় ৩১০০ টাকা থেকে ৬২০০ টাকা পর্যন্ত। বাকি টাকা দিয়ে প্রতিমাসে ক্রয় করা হয় ১২ পদের ওষুধ। যা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্য তুলনায় পর্যাপ্ত নয়।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের সেবা দানের উদ্দেশ্যে কিছু আধুনিক মেডিকেল সরঞ্জাম দেয় বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি। এর মধ্যে রয়েছে দুটি বেড, একটি এক্স-রে ভিউ বক্স, একটি ইসিজি মেশিন, একটি অপারেশন-সামগ্রী জীবাণু মুক্ত করার অটোক্লেব মেশিন। তবে এগুলোর ঠিকমতো সেবা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্যরা।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে গুটিকয়েক ওষুধ ছাড়া বেশিরভাগই ওষুধ বাহির থেকে ক্রয় করতে হয় । টিউশন করে চলা শিক্ষার্থীদের এভাবে বাইরে থেকে ওষুধ কিনা একটা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। আমাদের মেডিকেল টা একটা ইউনিয়ন পর্যায়ের হাসপাতালের মানের মতো । ওখানে মানুষ যায় কিছু ওষুধ দিয়ে দে কিন্তু প্রয়োজনীয় ওষুধ গুলো বাহির থেকে কিনতে হয়। এখানেও সেইম। আমরা চায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন যেন মেডিকেল ও বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন করে সাজায়।
বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল প্রয়োজনীয় সকল ওষুধ সরবরাহ করা, ২৪ ঘন্টা মেডিকেল সেন্টার খোলা রাখা ও আবাসিক ডাক্তারের ব্যবস্থা যেন নিশ্চিত করে।তবে আশার বাণী শোনালেন ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডা মাহমুদুল হাসান খান, তিনি বলেন ভিসি স্যার আমাদের সাথে বসছে। আমাদের সমস্যার কথা শুনেছে। আমরা আমাদের সমস্যা অনুযায়ী বিকেল চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ডিউটি দেওয়ার জন্য দুজন চিকিৎসক, দুজন নার্স, দুজন ফার্মাসিস্ট এবং দুইজন অফিস সহায়ক নিয়োগের জন্য আবেদন করেছি। আশা করি অতিদ্রুত সমস্যা কেটে যাবে। তবে আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। মেডিকেল সেন্টারে যে-সব চিকিৎসা সরঞ্জাম আছে জায়গা সংকটের কারণে এগুলো ব্যবহার করা হয় না । নতুন ক্যাম্পাসে এই সমস্যা ও কেটে যাবে বলে তিনি আশা করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড হায়দার আলী বলেন, এই ব্যাপারে ডাক্তারদের সাথে আমার আলোচনা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তব্যরত ডাক্তাররা শহরে বিভিন্ন হাসপাতালে প্র্যাকটিস করে। আর বিকাল চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ডিউটির জন্য ডাক্তার নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে, আমরা ওষুধের পরিমাণ বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছি। বন্ধের দিনেও মেডিকেল সেন্টারে ডাক্তার থাকার ব্যাপারে আলোচনা চলছে।
আপনার মতামত লিখুন :