ঢাকা রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫

রাবিতে শিক্ষককে অবরুদ্ধ রেখে অবস্থান কর্মসূচি

রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২৫, ০৪:৫৫ পিএম

রাবিতে শিক্ষককে অবরুদ্ধ রেখে অবস্থান কর্মসূচি

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্স বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের পরিক্ষার সময়সূচি প্রকাশ ও বিসিএসের অনুমতি বিষয়ক ‘অ্যাপেয়ারেন্স’ এর দাবিতে এক শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। আজ দুপুর সাড়ে ১২ টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ ভবনে ওই বিভাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। অবরুদ্ধ থাকা শিক্ষক হলো ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের ওই ব্যাচের পরিক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক এস এম কামরুজ্জামান। অন্যদিকে আন্দোলকারী শিক্ষার্থীরা হচ্ছে একই বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ শিক্ষার্থী।

এ সময় তারা ‘নতুন স্বাধীন বাংলায়, বৈষম্যের ঠায় নাই’, ‘আমাদের দাবি আমাদের দাবি, মানতে হবে মানতে হবে’, ‘পরীক্ষা নিয়ে গড়িমসি, চলবে না চলবে না’, ‘সব ক্যাম্পাস সুযোগ পেলে, আমরা কেন পাব না’সহ নানা স্লোগান দিয়ে আজকের ভেতরেই তাদের দাবি মেনে নেওয়ার দাবি করেন।

বিভাগ সূত্রে জানা যায়, লিখিত পরীক্ষা শেষ হলে শিক্ষার্থীরা বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে। ভেটেরিনারি বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের শিক্ষার্থীদের তাত্ত্বিক অংশ শেষ করে গত বছরের আগস্টে ইন্টার্নিশিপ শুরু করে। এই পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ওই ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বিভাগের শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে ইন্টার্নিশিপ চলাকালীন বিসিএস পরীক্ষার অংশগ্রহণের অ্যাপেয়ারেন্স দাবি করলে শিক্ষকরা তাদের দাবিতে মৌখিক সম্মতি দেন। পরে বিসিএসের সার্কুলার প্রকাশিত হলে আনুষ্ঠানিক আবেদন করে শিক্ষার্থীরা। তবে, মাত্র দেড় মাস ইন্টার্নশিপ হওয়ায় বিভাগীয় একাডেমিক কমিটি তাদের অনুরোধে নাকোচ করে। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি দিলে উপাচার্য তাদের জানান, এ সিদ্ধান্ত বিভাগ গ্রহণ করতে পারে। তবে, উপাচার্য শিক্ষার্থীদের পক্ষে বিভাগে অনুরোধ জানানোর আশ্বাস দেয়।

উপাচার্যের অনুরোধে তারা বিভাগে আবারও আবেদন করলে পুনরায় নাকোচ করে। পরে শিক্ষার্থীরা আরও এক দফা প্রশাসনের সহযোগিতা চায় এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে ইন্টার্নিশিপে থাকা শিক্ষার্থীরা কর্মবিরতিতে যায়। পরে তারা গত মঙ্গলবার অবস্থান কর্মসূচি ও গত বুধবারে বিভাগের সভাপতিকে অবরুদ্ধ করে ‍‍`ডিপার্টমেন্ট ব্লকেড‍‍` কর্মসূচি পালন করে। এ দিন প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা এসে শিক্ষার্থীদের ‍‍`ইতিবাচক‍‍` আশ্বাস দিয়ে সভাপতিকে মুক্ত করলেও শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়া হয় না। এর ধারাবাহিকতায় আজ সাড়ে ১২ টায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ওই ব্যাচের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক এস এম কামরুজ্জামানকে অবরুদ্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।

এ বিষয়ে ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের শোভন বিশ্বাস জানান, ‘আমাদের কারিকুলামের তাত্ত্বিক অংশের পড়াশোনা শেষ হয়েছে। এখন ইন্টার্নশিপ চলতেছে। এ সময় বিভাগ চাইলে শিক্ষার্থীদের একটা অ্যাপেয়ারেন্স দিলে দিতে পারে যার মাধ্যমে বিসিএসসহ চাকুরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সুযোগ দেওয়া হলেও আমাদের দেওয়া হচ্ছে না। আমরা দাবি আজকের ভেতরেই আমাদের ফলাফল প্রকাশ করে অ্যাপেয়ারেন্স দেওয়া দিতে হবে এবং সামনের পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করতে হবে।’

এ বিষয়ে জানতে অবরুদ্ধ শিক্ষক অধ্যাপক এস এম কামরুজ্জামানের মুঠোফোনে কল করলে তিনি বক্তব্য প্রদান করতে অস্বীকৃতি জানান।

তবে বিভাগের এ বিষয়ে জানতে চেয়ে ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মইজুর রহমানের মুঠোফোন একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী বিভাগের পরীক্ষাসহ একাডেমিক বিষয়ের দায়িত্ব বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কোনো নির্দেশনা দেওয়ার এখতিয়ার নেই।’

আরবি/জেডআর

Link copied!