বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-খৃষ্টান, ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী এবং বিদেশী শিক্ষার্থীসহ সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের সম্মিলিত ঐক্য গড়ে তুলতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শপথ পাঠ ও সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে ‘সম্প্রীতি মঞ্চে’র ব্যানারে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে রাবি উপাচার্য ড. সালেহ হাসান নকীব এই শপথ বাক্য পাঠ করান।
শপথ পাঠ শেষে উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, আমাদের এর আগে কখনোই এমন কোন অনুষ্ঠান করা প্রয়োজন পড়েনি। কিন্তু কিছু কুচক্রী মহলে কারণে আমাদের এরকম প্রোগ্রাম করতে হচ্ছে। শপথ বাক্যে যে সমস্ত কথাবার্তা লেখা আছে, বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষ কোন ধরনের শপথ না করেও আজীবন এগুলো মেনে আসছে। আমাদের কখনোই অস্প্রদায়িক প্রমাণ করা প্রয়োজন পড়েনি। কিন্তু আজকে একটা বিশেষ প্রেক্ষাপটে আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি নানান দিক থেকে আক্রান্ত হচ্ছে। আপনারা আপনাদের মতো ফাঁদ পাততে থাকুক, নিজেদের ছোট করতে থাকুন, আমরা আমাদের জায়গা থেকে সরবো না। এ শপথ বাক্য পাঠ শুধুই আনুষ্ঠানিকতা নয়; বরং এটাকে আমাদের বুকে ধারণ করাতে হবে এবং মনে-প্রাণে বিশ্বাস করতে হবে। এদেশের মানুষ অত্যন্ত অসাম্প্রদায়িক। এখানে বিদেশীদের খোঁচাখুঁজিতে কোন কাজ হবে না।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খান (শিক্ষা) বলেন, বর্তমান এই ধরনের সম্প্রীতি অনুষ্ঠান খুবই দরকার ছিল। আমরা ধর্মের ভিত্তিতে চলাফেরা করি না; বরং বাঙালি হিসেবে চলাফেরা করি। বাঙালি হলো আমাদের মূল পরিচয়। আমাদের ওপর কেউ যদি কোনো ধরণের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়, তাহলে আমরা তা শক্ত হাতে রুখে দিব।
রাবি ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম) বিভাগে পড়ুয়া নেপালী শিক্ষার্থী ডা. সানি কুমার দাস বলেন, সাত বছর হয়ে গেছে আমার বাংলাদেশ অবস্থান। বাংলাদেশ আমার খুবই ভালো লাগে। সুন্দর একটা দেশ। বাংলাদেশের মানুষ এতো কো-অপারেটিভ, আমি প্রথমে বাংলা বলতে পারতাম না কিন্তু এখন আমার নেপালি ভাষার থেকেও বাংলাটা সহজ মনে হয়। ধর্ম নিয়ে বিভিন্ন দেশে ঝগড়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নিয়ে কোনো ঝামেলা হয় না।
সমাবেশ অন্যান্যদের মধ্যে ছাত্র উপদেষ্টা আমিরুল ইসলাম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতেখারুল আলম মাসউদ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান সহ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :