ঢাকা বুধবার, ০১ জানুয়ারি, ২০২৫

ঢাবিতে হাসিনার গ্রাফিতি মোছার চেষ্টা, ফের আঁকলেন শিক্ষার্থীরা

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৯, ২০২৪, ০৩:১৪ পিএম

ঢাবিতে হাসিনার গ্রাফিতি মোছার চেষ্টা, ফের আঁকলেন শিক্ষার্থীরা

রূপালী বাংলাদেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্য সংলগ্ন মেট্রোরেলের পিলারে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গ্রাফিতি মধ্যরাতে মুছে ফেলা হয়। বিষয়টি জানতে পেরে শিক্ষার্থীরা এসে বাধা দেন। একইসাথে সেখানে আবারও শেখ হাসিনার ব্যঙ্গ গ্রাফিতি এঁকে দেন তারা।

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দিনগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদের অনুমতিতে মেট্রোরেলের কর্মীরা এটি মুছে ফেলার কাজ শুরু করেন। পরে শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে মাঝপথে মোছার কাজ বন্ধ করা হয়।  

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ফেসবুকের এক পোস্টে জানানো হয়, ‘‘স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের প্রতীক ঘৃণাস্তম্ভতে পুনরায় হাসিনার প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ছবি এঁকেছেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, চারুকলা অনুষদ শাখার সদস্য মৃধা রাইয়ান ও ঋষি । সাথে ছিলেন রাইয়ান ফেরদৌস ও সর্দার নাদিম মাহমুদ শুভ।’’

মেট্রোরেলের রাজু ভাস্কর্য সংলগ্ন ২ টি পিলারের একটিতে শেখ হাসিনা ও অপরটিতে শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রাফিতি আঁকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ। ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর জনতা এই গ্রাফিতিতে জুতা নিক্ষেপ, রক্তের প্রতীক স্বরূপ লাল রং, ইট-পাটকেল ও ঝাড়ু মেরে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করে। ফলে একসময়ের গ্রাফিতি জনতার ক্ষোভ ও ঘৃণার প্রতীকে রূপ নেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কয়েকজন লোক মেট্রোরেলের পিলারে শেখ হাসিনার ছবি মুছতে গেলে তারা বাধা দেন। পরে তারা জানতে পারেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের অনুমতিতেই এই কার্যক্রম চলছিল। এসময় একটি পিলারে শেখ মুজিবুর রহমানের সম্পূর্ণ ছবি অন্যটিতে শেখ হাসিনার ছবির মুখের অংশ মুছে ফেলা হয়।

তারা জানান, পরে শিক্ষার্থীরা বাধা দিয়ে মোছা বন্ধ করেন এবং পুনরায় শেখ হাসিনার ছবি এঁকে দেন। এরপর তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন।

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় শুরু হয়। ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট সাইয়েদ আব্দুল্লাহ তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে মেট্রোরেলের পিলার থেকে এই গ্রাফিতিটা গতকাল গভীররাতে মুছে ফেলা হচ্ছিল। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে গভীররাতেই অনলাইনে সরব হই আমরা কয়েকজন। ওইটা মোছা হয়ে যাওয়ায় পরবর্তীতে কয়েকজন হাসিনার অন্য একটা ক্যারিকেচার আঁকে। কিন্তু কথাটা হলো, ভিন্নটা কেন করা হবে, আগেরটাই লাগবে, হুবহু আগেরটাই এবং ওইটার ওপরও কালি মেখে, রক্তের মত লাল রঙ দিয়ে ডা–ই–নি টাইপ ভাইভই রাখতে হবে, আর ওইটাতে যেভাবে জুতার মালা দেওয়া ছিলো, ওই একইভাবে রাখতে হবে। মানে হুবহু রেস্টোর করতে হবে। ওইটার ভেতর যে মেসেজ ছিলো, নতুনটার ভেতর সেটা নাই। ’

এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ। তিনি রূপালী বাংলাদেশকে জানান, গোয়েন্দা সংস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রোগ্রামের ছবি তোলে। এই ছবিগুলোর সঙ্গে শেখ হাসিনার এবং শেখ মুজিবের ছবি যায়। ফলে তারা বলেছে, এখনো টিএসসিতে কীভাবে তাদের ছবি থাকে। তখন আমি ভারপ্রাপ্ত স্টেট ম্যানেজার ফাতেমা বিনতে মুস্তাফাকে বললাম মেট্রো কর্তৃপক্ষকে বলার জন্য। পরে মেট্রোরেলের পক্ষ থেকে লোক পাঠিয়ে মুছে ফেলা হয়। এটি সম্পূর্ণ একটি ভুল বোঝাবুঝি।

তিনি বলেন, একেবারেই একটা ভুল বোঝাবুঝি। এখানে কোনো ষড়যন্ত্র নেই। আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। ওখানে চারুকলার শিক্ষার্থীরা পুনরায় গ্রাফিতি একেছে । তাদের বলেছি, আজ আমি দুঃখপ্রকাশ করে একটি বিবৃতি দেব। এছাড়া এই স্তম্ভকে স্থায়ীভাবে ‘ঘৃণা স্তম্ভ’ ঘোষণা করব। 

Link copied!