ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

রাবিতে দীর্ঘদিনের খাবারের সমস্যার সমাধান হবে কী?

রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪, ০৯:১৩ পিএম

রাবিতে দীর্ঘদিনের খাবারের সমস্যার সমাধান হবে কী?

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছেন যে, ক্যাম্পাসের দোকানগুলোতে এবং হলে খাবারের দাম ও মানের মধ্যে ব্যাপক অসামঞ্জস্যতা রয়েছে। দাম বাড়লেও খাবারের মানের উন্নতি হয়নি। তবে ক্যাটারিং সিস্টেমে খাবারের মান নয়, বরং দাম নিয়ে অভিযোগ তাদের। পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন থেকে খাবারের দাম ও মানের মধ্যে সামঞ্জস্যতা রক্ষার জন্য বিভিন্ন  উদ্যোগ নেওয়া হলেও এই সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী এবং কার্যকরী কোনো সমাধান  হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২২ সালে রাবির হলগুলোর ডাইনিংয়ে খাবারের মূল্যবৃদ্ধি করা হয়। আগের ২৪ টাকার দুপুরের খাবারের দাম বৃদ্ধি করে ২৮ টাকা এবং ১৮ টাকার রাতের খাবারের দাম বাড়িয়ে ২২ টাকা করা হয়। দাম বৃদ্ধির পরেও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন যে, খাবারের মান একই রকম নিম্নমানের রয়ে গেছে। মাংস বা মাছের টুকরো এতোই ছোট যে, তা দিয়ে পর্যাপ্ত খাবার খাওয়া সম্ভব নয়। অধিকাংশ সময় অর্ধ-সিদ্ধ করা ভাত শিক্ষার্থীদের খেতে হয়। একই ধরনের খাবার প্রতিদিন পরিবেশন করায় শিক্ষার্থীরা ভিন্নধর্মী খাবার থেকে বঞ্চিত হয়।

এদিকে ২০২৪ সালের শুরুতে খাবারের মান উন্নত করার লক্ষ্যে দুপুরের খাবারের দাম ৩৫ টাকা এবং রাতের খাবারের দাম ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে এই সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়।

গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে সৈয়দ আমীর আলী হল এবং শাহ মখদুম হলে ডাইনিং ক্যাটারিং ব্যবস্থা চালু করা হয়। শাহ মখদুম হলে ক্যাটারিং সিস্টেম অল্প কিছুদিন চলার পর বন্ধ হয়ে যায়, তবে আমীর আলী হলে এই ব্যবস্থা চালু থাকে। ক্যাটারিং সিস্টেমে আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য দুপুর ও রাতের খাবারের দাম নির্ধারণ করা হয় ৩৫ টাকা এবং অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য ৪০ টাকা। এই সিস্টেমে খাওয়ার জন্য একদিন আগে টোকেন সংগ্রহ করতে হয়।

আগস্ট মাসে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর ছেলেদের কয়েকটি হলে ক্যাটারিং সিস্টেম চালু করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে শাহ মখদুম হল,মতিহার হল, বঙ্গ বন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও মাদার বখস হল। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, খাবারের মান ঠিক থাকলেও দাম বেশি হয়ে যাচ্ছে। মাস শেষে আবাসিক শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ৬০০ টাকা এবং অনাবাসিকদের ৯০০ টাকা ব্যায় করা লাগছে। শিক্ষার্থীদের মতে,  প্রশাসন থেকে ভর্তুকি আসলে  হলের  খাবারের দাম ও মানের সামঞ্জস্য বজায় রাখা সম্ভব হবে। 

এ বিষয়ে শাহ মখদুম হলের প্রাধ্যক্ষকে অধ্যাপক রুহুল আমিন বলেন, ‍‍`কিছু শিক্ষার্থী আছে, যাদের ৫০ টাকা দিয়ে খাবার খেতে পারলে ভালো হতো। ক্যাটারিং সিস্টেমে তাদের এখন ২০ টাকা বাড়িয়ে ৭০ টাকা দিতে হচ্ছে। যা তাদের জন্য বোঝা হয়ে যাচ্ছে। কোনোভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায় কিনা, সে বিষয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে কথা বলবো।‍‍`

ক্যাম্পাসের দোকানগুলোতেও খাবারের মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। অনেক সময় পঁচা- বাসি খাবার গরম করে  পরিবেশন করা হয়।তাছাড়া দেখা যায় এই দোকানগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার রান্না ও পরিবেশন করে রাখা  হয়। গত ২২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসের দোকানগুলোর খাবারের দাম নির্ধারণ করে দেয়। এতে বিভিন্ন খাবারের দাম কমানো হলেও মান ও পরিমানও কমে যায়। তাছাড়া, নির্ধারিত এই মূল্যতালিকা দীর্ঘদিন কার্যকর থাকেনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান  প্রক্টর অধ্যাপক  ড. মো. মাহবুবুর রহমানকে  এ বিষয়ে প্রশাসন থেকে পরবর্তীতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কিনা জিজ্ঞাস করলে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

আরবি/জেডআর

Link copied!