গুণগত মান ঠিক রেখে বিশ্ব স্বীকৃত ও ভারতীয় বিভিন্ন স্কিন কেয়ার পণ্য, ঔষুধ ও সাপ্লিমেন্ট ফিডের বিকল্প বা অনুরূপ দেশীয় পণ্য উৎপাদনে সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ন্যানো-বায়ো অ্যান্ড এডভান্স মেটারিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং (নেইম ল্যাব) ল্যাবরেটরি।
সম্প্রতি বাংলাদেশিরা ভারতীয় পণ্য বয়কটের পর গুণগত মান অক্ষুন্ন রেখে ভারতের চেয়ে ভালো মানের ওষুধ, সাবান, লোশন, তেল, ফেইস ক্রিমসহ বিভিন্ন স্কিন কেয়ার পণ্য উৎপাদনে দেশি কোম্পানিগুলোকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন নেইম ল্যাবের পরিচালক ড. মো. জাভেদ হোসেন খান।
ইতোপূর্বে যবিপ্রবির এ ল্যাবটি বার্জার ও বসুন্ধরার মতো দেশীয় কোম্পানিগুলোকে বিভিন্ন পণ্যের ফরমুলেশন দিয়েছে। ঔষধ, বিভিন্ন স্কিন কেয়ার পণ্য ও পেইন্টের আন্তর্জাতিক মান ঠিক রেখে সুলভ মূল্যে দেশীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও কোম্পানিকে পণ্যের ফরমুলেশন সরবরাহ করেছে।
এ বিষয়ে নেইম ল্যাবের পরিচালক ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. জাভেদ হোসেন খান বলেন, গবেষণার পাশাপাশি আমরা দেশের স্বার্থে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে আসছি দীর্ঘদিন ধরে। আমাদের ল্যাব কেমিক্যাল সম্পর্কিত যেকোনো পণ্যের ফরমুলেশন করতে সামর্থ্য রাখে। বর্তমান বাজারের চেয়ে আমরা উচ্চমানের ফরমুলেশন তৈরিতে সক্ষম। আমাদের ফরমোলেশনকৃত পণ্য অবশ্যই ভারতীয় পণ্য থেকে ভালো হবে, কারণ আমরা এ দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের দেশের মানুষের ভালোর কথা চিন্তা করব।
আমাদের দেশে ভারতের চেয়েও অনেক উন্নত মানের ল্যাব রয়েছে। ল্যাবগুলো ইউকে, ইউএসএ, জাপান, ইতালির মতো দেশের ল্যাবের সাথে সমন্বয় করে কাজ করে। কাজেই আমাদের কাজ অবশ্যই ভারত বা অন্য দেশের চেয়ে ভালো হবে। ভারতীয় পণ্যের গুণগত মান অনেক ক্ষেত্রে ভালো থাকে না। সম্প্রতি ভারত থেকে আনা ডিমে পরীক্ষা করে বিভিন্ন ভারী পদার্থ যেমন লেড, মার্কারি ইত্যাদি পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, ভারত তো আমাদের স্বাস্থের ব্যাপারে খেয়াল করবে না, তারা দেখবে তাদের ব্যাবসা কিভাবে বাড়ানো যায়। দেখা যায়, দেশের লোকাল কোম্পানি গুলো ভারত থেকে পণ্য আমদানি করে তা উচ্চ মূল্যে আমার দেশে বিক্রি করে। আমরা চাই দেশের মানুষ যেন সুলভ মূল্যে তাদের প্রয়োজনীয় দৈনন্দিন জিনিস ক্রয় করতে পারে। এদেশে পণ্য তৈরি হলে দেশের মানুষজন তা অর্ধেকের চেয়ে কম খরচে কিনতে পারবে।
এজন্য দেশের সরকারের প্রতি দাবি, সরকার যেন দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে এ আওয়াজ পৌছে দেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন তাদের ল্যাব ব্যবহার করে পণ্যের ফরমুলেশনের মাধ্যমে দেশীয় পণ্য উৎপাদনে সাহায্য করে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে পরীক্ষা, পরামর্শ এবং রাসায়নিক ফর্মুলেশন পরিষেবার ওপর ভিত্তি করে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর স্ট্যান্ডাইজেশন ইউকে (আইএসও)-এর সনদ পেয়েছে যবিপ্রবি `নেম ল্যাব`। বাংলাদেশের মধ্যে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরি হিসেবে সর্বপ্রথম এ সনদ পায় ‘নেম ল্যাব’। যবিপ্রবির কেন্দ্রীয় গবেষণাগার সিএসআইআরএল এবং জিনোম সেন্টার ও আইএসও সনদ অর্জন করে।
আপনার মতামত লিখুন :