ঢাকা রবিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৪
বার্ডোর কর্মশালায় বক্তারা

প্রতিবন্ধীদের শুধু সহমর্মিতা নয়, অধিকার নিশ্চিতের তাগিদ

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২৪, ১১:৪৭ পিএম

প্রতিবন্ধীদের শুধু সহমর্মিতা নয়, অধিকার নিশ্চিতের তাগিদ

বার্ডো আয়োজিত ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ বাস্তবায়ন’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: সমাজের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি শুধু সহমর্মিতা নয়, তাদের অধিকার নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন বক্তারা। শনিবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর মিরপুরে ব্লাইন্ড এডুকেশন অ্যান্ড রিহেবিলিটেশন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (বার্ডো) আয়োজিত ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ বাস্তবায়ন’ শীর্ষক এক কর্মশালায় বক্তারা এই তাগিদ দেন। তারা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২০১৩ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন ও তাদের অধিকার রক্ষায় সরকারসহ সমাজের সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব (রেক্টর) ড. মো. ওমর ফারুক বলেন, আমাদের প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর মধ্যে যে সম্ভাবনা আছে তা যদি প্রকাশের সুযোগ করে দিতে পারি, তাহলে তাদের পাশাপাশি দেশ এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী মানুষকে নিয়ে আমাদের সমাজে ও পরিবারে স্টিগমা ও ট্যাবু রয়েছে। এটি কাটিয়ে উঠতে সরকার ও সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন,  প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আমরা যেন সমাজের জন্য অভিশাপ মনে না করি। এ ক্ষেত্রে সরকার ও জনগণের সমন্বয় প্রয়োজন। তাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। দানের জন্য নয়, এটা তাদের অধিকার। এ সময় তিনি প্রতিবন্ধীদের প্রযুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্টাতার কথাও বলেন।

তিনি আরও বলেন, সরকারের ব্যাপারে আমাদের ভুল ধারণা রয়েছে। সরকার মানে শুধু প্রধান উপদেষ্টা বা উপদেষ্টারা নয়। আপনি-আমি সবাই সরকারের অংশ। আমাদের সেইভাবে চিন্তা করতে হবে। সরকারের ব্যুরোক্রেসি ও দায়িত্বশীলদের বদলির বিষয় রয়েছে, যা অনেক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। সরকার এ বিষয়ে কাজ করছে। তারা সংশ্লিষ্টদের নির্দিষ্ট সেক্টরে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করছে।

আলোচনা সভায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বার্ডোর উপ-ব্যবস্থাপক ফিরোজা খাতুন। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনে ৪৪টি ধারা এবং ১৬টি তফসিল রয়েছে। এই আইনে ধারা নং ১৬-এ প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর ২১টি অধিকারের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া ১৭ থেকে ২৫ পর্যন্ত ৫টি কমিটি সম্পর্কে বলা হয়েছে এবং কমিটিগুলোর দায়িত্ব ও কার্যাবলী উল্লেখ রয়েছে। এগুলো হলো— জাতীয় সমন্বয় কমিটি, জাতীয় নির্বাহী কমিটি, জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি, শহর কমিটি। এই কমিটির মিটিংগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হওয়া প্রয়োজন। সঠিকভাবে এই মিটিংগুলো কার্যকর হলে প্রতিবন্ধী মানুষ উপকৃত হবে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (আইন ও সংস্থা অধিশাখা) এরশাদ হোসেন খান প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে ‘মুক্তা’ পানি বিপণন ও উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগের কথা জানান। এছাড়া সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহতদের আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি সুচিকিৎসা নিশ্চিত ও পুনর্বাসনে সরকার কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বার্ডোর নির্বাহী পরিচালক একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট নাগরিক মো. সাইদুল হক। তিনি উপস্থিত সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বার্ডোর কাজ তুলে ধরে বলেন, বার্ডো অত্যাধুনিক ব্রেইল প্রেস স্থাপন করেছে এবং মোট ৬টি ব্রেইল প্রিন্টার আছে। আবাসিক বিদ্যালয়ে ৬০ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্র আছে। এছাড়া বার্ডো মেয়েদের জন্য একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা রয়েছে।

বার্ডোর সহসভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাইটসেভারস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর অমৃতা রেজিনা রোজারিও, সিবিএম গ্লোবালের বাংলাদেশের প্রতিনিধি দেওয়ান মাহফুজ ই মওলা, জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের পরিচালক (পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও তথ্যপ্রযুক্তি) ও যুগ্ম-সচিব মো. আজমুল হক, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. নওরোজ ফেরদৌস, রূপালী বাংলাদেশ-এর বিজনেস এডিটর রহিম শেখ প্রমুখ।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!