বুধবার, ০২ এপ্রিল, ২০২৫

ঈদ আনন্দ মিছিলে গাধার পিঠে কে?

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মার্চ ৩১, ২০২৫, ০৬:০৮ পিএম

ঈদ আনন্দ মিছিলে গাধার পিঠে কে?

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর আজ পালিত হলো পবিত্র ঈদুল ফিতর। ব্যান্ড পার্টির বাজনা, ঘোড়ার গাড়ি এবং মুঘল আমলের ইতিহাস তুলে ধরে রাজধানীতে ঈদ আনন্দ মিছিল করেছেন মুসল্লিরা। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার পরবর্তী সময়ে এটিই প্রথম ঈদ। তাই এবার ঈদে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের হৃদয়ে ছিল বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাস।

সোমবার (৩১ মার্চ) সকালে ঈদের নামাজ শেষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আয়োজনে এ ঈদ আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

‘ঈদ মানেই সম্প্রীতি’, ‘ঈদ মানেই ঐক্য’, ‘ঈদ এলো সুখের বার্তা নিয়ে’ এমন নানান সামাজিক ও ঐক্যের বার্তা তুলে ধরা প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে আনন্দ মিছিলে। আনন্দ মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ‘ঈদ মোবারক’সহ নানান স্লোগান দেন। মিছিলে অংশ নেন প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ।

ঢাকা উত্তর সিটি সূত্রে জানা গেছে, আনন্দ মিছিলে বাদ্যবাজনা বাজান দেড়শ’টি ব্যান্ডদলের সদস্যরা। অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল ঈদের শুভেচ্ছা ও সচেতনতার বার্তাসংবলিত এক হাজার প্ল্যাকার্ড। আনন্দমিছিলের অগ্রভাগে পাঁচটি সুসজ্জিত ঘোড়া রাখা হয়। মিছিলের সঙ্গে রাখা হয় ১৫টি ঘোড়ার গাড়ি। তাতে চড়ে অনেকেই অংশ নেন আনন্দমিছিলে। পাশাপাশি মোগল ও সুলতানি আমলের ইতিহাস–সংবলিত ১০টি পাপেট শো করা হয়। আনন্দমিছিল থেকে ন্যায্য ঢাকা শহর গড়ার বার্তা দেওয়া হয় বলে ডিএনসিসি সূত্র জানিয়েছে।

তবে ঈদ আনন্দ মিছিল ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বইছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। বিশেষ করে একটি পাপেট নিয়ে নেটিজেনরা তীর্যক মন্তব্য করছেন। ঈদগাহে গাধা ও মানুষের প্রতিকৃতি আনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুসল্লিরা। যদিও ঈদুল ফিতরের নামাজের পর আনন্দ মিছিলে পাপেটটি আর নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে। 

প্রতীকী নাসিরুদ্দিন হোজ্জা ঘুরে বেড়াচ্ছেন আকশেহিরে

এমদাদুল হক নামে একজন তার ফেসবুকে এ ঘটনার সমালোচনা করে লিখেছেন, নাসিরুদ্দিন হোজ্জা’র পাপেট বানাতে গিয়ে এটা কি বানিয়েছে কলা বিজ্ঞানীরা? এদের হাতে যে অনুষ্ঠানেরই দায়িত্ব দেওয়া হোক না কেন সেটাকে বিতর্কিত করতে কোনো না কোনো উপাদান রাখবেই। ঈদ আনন্দ মিছিলে এগুলোর আদৌও প্রয়োজন আছে কি? ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এতো প্রাণবন্ত একটি আয়োজনে এই কলা বিজ্ঞানীদের জন্য শেষ পর্যন্ত সমালোচনার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া গেলো না। পরবর্তী যেকোনো আয়োজনে এদের বিষয়ে আয়োজকরা সচেতন থাকবেন সেটাই প্রত্যাশা।

তবে এখানেই থেমে থাকেনি। গাধার পিঠে উল্টোমুখে বসে থাকা ব্যক্তিকে নিয়ে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। কৌতূহলী হয়ে অনেকেই প্রশ্ন করছেন, গাদার পিঠে কে এই ব্যক্তি?

সোশ্যাল মিডিয়ায় পাপেটের গাধার পিঠে থাকা ব্যক্তিটির পরিচয় নিয়ে চলছে অন্তর্দ্বন্দ্ব। অনুমান করে কেউ কেউ বলছেন, পাপেটটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ব্যঙ্গ করে বানানো হয়েছে। কেউ বলছেন, এটি জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানকে ব্যঙ্গ করে তৈরি করা। আবার নেটিজেনদের একদলের দাবি, এটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ব্যঙ্গ।

জানা গেছে, সমালোচিত পাপেটটি মধ্যযুগীয় সুফি সাধক মোল্লা নাসিরউদ্দিন হোজ্জার। যিনি পেশায় বিচারক বা কাজী ছিলেন এবং ইসলামের নানা নিগুঢ় তত্ত্বে ছিলেন বিরাট পণ্ডিত। উপস্থিত বুদ্ধি ও বিজ্ঞতার খ্যাতি দেশ ও কালের সীমানা ছাড়িয়েছে- যদিও কোনো কোনো গল্পে তাকে পাওয়া যায় বোকা ও নেহাতই সাদাসিধে মানুষ হিসেবে। ফলে নাসিরুদ্দিন মহাবুদ্ধিমান নাকি মহাবোকা ছিলেন তা নিয়ে জল্পনাকল্পনার শেষ নেই।

তবে বিতর্ক এতেও থাকেনি। ইন্টারনেটে থাকা হোজ্জার বিভিন্ন ছবিতে তার ভ্রু পাকা থাকলেও গোঁফ আছে। কিন্তু ঈদের হোজ্জার ছবিতে গোঁফ না থাকায় প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ।

আরবি/এসএমএ

Link copied!