শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


তরিক শিবলী (উত্তরা)

প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৪, ১২:২৪ পিএম

গ্যাস সংকট

রাজধানীর উত্তরবাসীদের ভোগান্তি

তরিক শিবলী (উত্তরা)

প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৪, ১২:২৪ পিএম

রাজধানীর উত্তরবাসীদের ভোগান্তি

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

গ্যাস সঙ্কটের কারণে দুর্বিষহ দিন কাটছে রাজধানীর উত্তরার বাসাবাড়ির মানুষদের। এসব মানুষদের কষ্ট, দুর্দশা যেন দেখার কেউ নেই। রাজধানীর উত্তরার বাসাবাড়িতে গ্যাস সঙ্কটের দিকে নজর নেই কারও। স্থানীয়রা বলছেন, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির অসাধু কর্মকর্তা ও অবৈধ ব্যবসায়ীদের আঁতাতে এখানকার নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের বাসাবাড়িতে প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে দুপুর ১/২টা পর্যন্ত লাইনে গ্যাস থাকে না।

রাজধানীর অন্যতম ঘনবসতি এলাকা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন উত্তরখান, কাঁচকুড়া, মাউসাইদ, আটিপাড়া, দক্ষিণখান, কোটবাড়ি, মোল্লারটেক, হলান, কাওলা, আসকোনা, ডুমনি, নিকুঞ্জ, খিলখেত। এছাড়াও হরিরামপুর, তুরাগ, দলিপাড়া,কামারপাড়া, বাউনিয়া ও নলভোগ এলাকা। এসব এলাকায় প্রতিদিন দুপুর ২টার পর অল্পসময়ের জন্য লাইনে গ্যাস দিলেও প্রয়োজনের তুলনায় গ্যাসের চাপ থাকে অনেক কম। কখনো কখনো সন্ধ্যা থেকে রাত ১/২ টা পর্যন্ত লাইনে গ্যাস সরবরাহ থাকে না।

স্থানীয়রা জানান, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে দেশের প্রতিটি সেক্টরে পরিবর্তন আসলেও তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা এখনো রয়েছে বহাল তবিয়তে। তাদের স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে উত্তরার বাসাবাড়িতে চলছে গ্যাসের চরম সঙ্কট। নিরুপায় হয়ে প্রয়োজন মিটাতে তারা সিলিন্ডার গ্যাস ও ইলেক্ট্রিক চুলার দিকে ঝুঁকছে। গ্যাসের অভাবে এখানকার গৃহীনিরা রান্না করতে পারছেনা, গরীব ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মাঝে চলছে চরম হাঁহাঁকার। কখনো কখনো গ্যাসের মাসিক বিল পরিশোধ করা নিয়ে বাড়িওয়ালা-ভাড়াটিয়াদের মাঝে মাঝে তুমুল ঝগড়া বিবাদ হতেও দেখা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, এখানকার ফ্ল্যাট বাড়ির বেশির ভাগ বাসায় গৃহবধুরা ইলেক্ট্রিক চুলায় রান্না করছেন। এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলছেন নিরুপায় হয়ে বাসা বাড়িতে গ্যাসের পরিবর্তে ঝুঁকিপূর্ণ ইলেক্ট্রিক চুলায় রান্না করার কারণে বিদ্যুতের উপর চাপ পড়ছে। গ্যাসের জন্য গভীর রাত পর্যন্ত বসে থাকতে থাকতে অনেক গৃহীনি অসুস্থ হয়ে উঠেছে। দক্ষিণখান আজমপুর কাঁচাবাজার এলাকার গৃহিণী ইসমাত আরা বলেন, গত কয়েকদিন যাবত সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত গ্যাস আসার অপেক্ষায় থাকি, আমরা গরীব মানুষ গ্যাস সিলিন্ডার কেনার সামর্থ্য নেই। লাইনের গ্যাসের জন্য রাত জেগে অপেক্ষা করতে হয়। এ সময় গার্মেন্টকর্মী ফাতেমা, আয়শা, সানজিদা, সেলিনা, মুক্তাসহ অনেকে বলেন, একদিকে বৃষ্টির পানিতে সড়কে কাঁদামাটি, অন্যদিকে ভাংগা চুড়া রাস্তায় চলাচল করা যায় না, তার উপর দেশের চলমান রাজনীতির অস্থিরতার কারণে পাড়া মহল্লায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।এ অবস্থায় সারাদিন কাজ শেষে সন্ধ্যায় বাসায় এসে রান্না করে বাচ্চাদের খাওয়াবো সেটাও পারি না। গ্যাসের জন্য রাত জাগতে জাগতে অসুস্থ হয়ে গেছি।

স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে জানা যায়, গত কয়েক মাস যাবত সকাল থেকে সারাদিন উত্তরার বিভিন্ন এলাকার বাসা বাড়িতে চুলা জ্বলে না। এ সঙ্কটের কারণে অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে উত্তরখান দক্ষিণখান খিলখেত নিকুঞ্জ তুরাগ হরিরামপুরের লাখো মানুষ। তিতাস গ্যাস ট্রাসমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডর কর্মকর্তারা এলাকার শতাধিক ফ্যাক্টরীতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। তাদের সহযোগীতায় গড়ে উঠা অবৈধ ফ্যাক্টরী গুলোতে দিনে রাতে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ভোক্তাদের সেবা নিশ্চিত না করেই দফায় দফায় এলপি গ্যাসের দাম বাড়িয়েছিলেন। এখানকার ফ্যাক্টরী গুলোর অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিছিন্ন হলেই এলাকার গ্যাস সঙ্কট দূর হবে।

উত্তরার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে, বেকারি,ওয়াস, ডায়িং ও ছোট বড় গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী। এখানকার স্থানীয় বাড়ির মালিকগণ বলেন, ব্যাঙের ছাতার মত আবাসিক এলাকায় এলোপাথাড়ি ভাবে গড়ে উঠা ফ্যাক্টরী গুলোতে দিনে রাতে গ্যাস সরবরাহ থাকলেও এলাকার বাসা বাড়িতে সকাল থেকেই আমরা গ্যাস পাই না।

গ্যাস সঙ্কটের কারণে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এখানকার স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রী, কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থী , নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ ও গার্মেন্টস কর্মীরা। সকাল থেকেই বাসা বাড়িতে গ্যাস না থাকার কারণে এখানকার বেশির ভাগ পরিবারে রান্না হয় না।

এ বিষয়ে তিতাস ট্রাস্টমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তারা জানান, উত্তরার ডুমনি, খিলখেত তুরাগ, কামারপাড়া, উত্তরখান মাজার,হেলাল মার্কেট, চানপাড়া ও দক্ষিণখান হলান, মোল্লাবাড়ী এলাকার বেকারি, ওয়াস এবং ডায়িং ফ্যাক্টরীগুলোতে অভিযান চালাবে তারা। অবৈধ গ্যাস সংযোগের তথ্য পেলে সংযোগ বিছিন্ন সহ মালামাল জব্দ করা হবে সেই সাথে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভোক্তাদের গ্যাস সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন করতে কাজ করছেন তারা।

এ বিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরগণ বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এ এলাকার চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস লাইন নতুন করে সংস্কার কাজ চলছে। অবৈধভাবে কেউ লাইন থেকে গ্যাস টেনে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে এমন তথ্য পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরবি/জেআই

Link copied!