রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের সামনে দুই ব্যবসায়ী নেতাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার (১১ জানুয়ারি) এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এর আগে শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাতে ভুক্তভোগী দুই ব্যবসায়ীর ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার ব্যবসায়ীদের নাম, এহতেসামুল হক (৪২) ও ওয়াহিদুল হাসান দীপু। এদের মধ্যে এহতেসামুল হকের অবস্থা গুরুতর। তিনি ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহত অপর ব্যক্তি দীপু প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
আহত ওয়াহিদুল এলিফ্যান্ট রোড কম্পিউটার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের ব্যবসায়ী মালিক সমিতির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক। আর এহতেসামুল হক মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের ব্যবসায়ী মালিক সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক।
ভুক্তভোগী আহত ব্যবসায়ী ওয়াহেদুল হাসান দীপু বলেন, চাপাতি দিয়ে কোপানো হয়েছে। ২০/২২ জনের মতো ওরা ছিল। বেশ কয়েকজন হামলায় অংশ না নিয়ে দাঁড়িয়েছিল পকেটে হাত দিয়ে। হয়ত ওদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। সুযোগ পেলে গুলি করে দিত।
হামলা করল কারা– জানতে চাইলে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে এটা পরিকল্পিত হামলা। এটা ব্যবসায়িক এলাকা। এখানে প্রচুর চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটে। কারা চাঁদাবাজি করে সেটাও সবার জানা। আমি আর কি বলব। হামলা তো হলোই, বললে আরও চাপ, হামলার শঙ্কা থেকে যায়। আপনারা সাংবাদিক-পুলিশ খুঁজে বের করেন কারা এসব করছে। আমার মনে হয়, লোকাল সন্ত্রাসী। সন্ত্রাসীর কোনো দল থাকতে পারে না। আগে ছোটখাটো ঘটনা ঘটেছে কিন্তু এমন ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে, এ হামলার প্রতিবাদ ও জড়িতদের বিচার দাবিতে শনিবার দুপুরে এলিফ্যান্ট রোডে বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, মাল্টিপ্ল্যান মার্কেটের সামনে ৪ থেকে ৫ জন মিলে এহতেসামুলকে চাপাতি দিয়ে আঘাত করছে। পাশে দাঁড়িয়ে আছে আরও ৬ থেকে ৭ জন। সবাই মুখোশ পরা। চাপাতির আঘাতে এহতেসামুল রাস্তায় পড়ে যান। এর পরও তার ওপর কোপ চালানো হয়। তিনি ওঠার চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু হামলাকারীদের আঘাতে উঠতে না পেরে এক পর্যায়ে সড়কে শুয়ে পড়েন। তখনও আঘাত করতে থাকে দুর্বৃত্তরা। আবারও তিনি ওঠার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। হামলার সময় সড়কে পথচারী এবং গাড়ি চলাচল করতে দেখা যায়। কিন্তু হামলাকারীদের ঠেকাতে কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। দেড় থেকে দুই মিনিট পর হামলাকারীরা সটকে পড়ে।
নিউমার্কেট থানা পুলিশ জানিয়েছে, হামলার ঘটনায় ওয়াহিদুল হাসান বাদী হয়ে শনিবার রাতে মামলা করেছেন।
পুলিশের নিউমার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার তারিক লতিফ গণমাধ্যমে বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরার কয়েকটি ফুটেজে দেখা গেছে, হামলায় ১০-১২ জন অংশ নিয়েছে। তাদের মধ্যে এক-দু’জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। হামলায় জড়িত বাকিদেরও শনাক্তের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :