রাষ্ট্র প্রদত্ত নাগরিক সেবাগুলো সহজে পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন কর্মজীবী নারীরা। সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা সম্প্রসারণের মাধ্যমে কোন ধরনের জটিলতা ছাড়াই এসব সেবা প্রত্যাশা করেছেন তারা। অভ্যন্তরীণ অভিবাসী শ্রমিকদের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি উন্নয়নে আয়োজিত এক নেটওয়ার্কিং সভায় নাগরিক সেবা গ্রহণে নানান সমস্যার অভিযোগ তুলে ধরেন কর্মজীবী নারী প্রতিনিধিরা। বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশনে পিপলস কারেজ ইন্টারন্যাশনাল (পিসিআই)-এর সহায়তায় এবং সামাজিক সংগঠন "কর্মজীবী নারী" এর বাস্তবায়নে সভাটি আয়োজিত হয়।
সভায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের ঢাকা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) নাজনীন আক্তারী, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আলী কবির, শহর সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তা আব্দুস সালাম, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ২ নং ওয়ার্ডের সচিব আব্দুল সামাদ, নগর ডিজিটাল সেন্টার ফোরামের সভাপতি জহিরুল ইসলাম এবং দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ্য প্রতিবেদক শাওন সোলায়মান সহ অন্যান্যরা আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এসময় কর্মজীবী নারী প্রতিনিধি হিসেবে কর্মজীবী নারী এর টিম লিডার মোসাঃ কাজলী, আমেনা আক্তার এবং তারা বেগম নাগরিক সেবা গ্রহণে নিজেদের সম্মুখীন হওয়া নানান জটিলতা তুলে ধরেন।
কাজলী বলেন, বস্তি এলাকায় বসবাসরত শিশুদের জন্ম নিবন্ধন সনদ পাওয়া খুবই কঠিন। শিশুদের জন্ম নিবন্ধন করতে আগে অভিভাবকের জন্ম নিবন্ধন সনদ থাকতে হয়। কিন্তু এমন প্রান্তিক মানুষের এসব সনদ থাকে না। অনেক শিশুর বাবা অথবা মা অথবা উভয়েই নেই। জন্ম নিবন্ধন সনদ ছাড়া স্কুলে ভর্তি নেওয়া হয় না। তাহলে কি এই শিশুরা ভালো স্কুলে পড়বে না? অনুষ্ঠানে কর্মজীবী নারী এর প্রকল্প প্রকল্প সমন্বয়ক রাজীব আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ অভিবাসী শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমে সুশীল সমাজ, মানবাধিকার সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের মধ্যে আলোচনা কম রয়েছে। কর্মজীবী নারীদের প্রত্যাশা যে, অভ্যন্তরীণ অভিবাসী শ্রমিকদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিতের জন্য সকল পক্ষের এগিয়ে আসা প্রয়োজন। সকলের সমন্বিত উদ্যোগে তাদের আইনানুগ কাজের পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়তা করবে।
ডিএনসিসি ২ নং ওয়ার্ডের সচিব আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের ৫৪ টি সামাজিক সুরক্ষা সেবার মধ্যে মিরপুরে ১৬ টি সেবা চলমান আছে। জনগণের সেবক হিসেবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি প্রকৃত সেবাগ্রহীতার দোরগোড়ায় সেবা পৌছে দিতে। কিন্তু মানুষ এখন ব্যক্তিকেন্দ্রিক। এসব সেবা বিতরণের ক্ষেত্রে সরকার একচ্ছত্র ক্ষমতা দিয়েছে জন প্রতিনিধিদের। জন প্রতিনিধিরা তাদের ঘনিষ্ঠ লোকজন এবং ভোটারদের সেসব সুবিধা বেশি দিতেন। এখন সেগুলোর পরিবর্তন করতে হবে।
রূপালী বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ্য প্রতিবেদক শাওন সোলায়মান বলেন, সাধারণ নাগরিকের নাগরিক সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতার সৃষ্টি হলে গণমাধ্যম সেগুলো তুলে ধরে। অনেকক্ষেত্রেই গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের জেরে সেসব সমস্যার সমাধান হয়েছে। আগামীতেও গণমাধ্যম সেগুলো তুলে ধরবে। দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যম হিসেবে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ নিজ অবস্থান থেকে এ বিষয়ে ভূমিকা রাখবে।
আপনার মতামত লিখুন :