শীর্ষ সন্ত্রাসী এজাজের মৃত্যু, পরিবারের দাবি পরিকল্পিত হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২৫, ১১:২২ এএম

শীর্ষ সন্ত্রাসী এজাজের মৃত্যু, পরিবারের দাবি পরিকল্পিত হত্যা

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী হেজাজ বিন আলম ওরফে এজাজ (৪০)। তবে পরিবারের অভিযোগ, ডিবির হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে এজাজের।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি এজাজকে আটকের পর মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করে সশস্ত্র বাহিনী। পরে থানা-পুলিশ ডাকাতির মামলা দিয়ে আদালতে পাঠায়। ওই দিনই আদালত তাকে জামিন দেন। এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে টনক নড়ে পুলিশের। তাকে খুঁজে বের করতে সাঁড়াশি অভিযানে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে শনিবার ভোরে ডিবি ও থানা-পুলিশ এজাজের অবস্থান নিশ্চিত হয়।

ধানমন্ডির জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। পরে সেখান থেকে গ্রেপ্তার করে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হয় এজাজকে। সেখানেই ডায়ালাইসিস চলাকালে তার মৃত্যু হয়। তবে স্বজনদের অভিযোগ, ডিবির হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে এজাজের।

এজাজের মামা হাবিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, গত ১১ মার্চ এজাজকে যৌথবাহিনী জিগাতলার টালি অফিস রোড এলাকা থেকে আটক করে মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করে। তার বিরুদ্ধে ডাকাতির একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পরদিন (১২ মার্চ) পুলিশ আদালতে পাঠিয়ে দেয়। আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর এজাজকে ধানমন্ডির জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তিনি বলেন, শনিবার ভোররাতে দিকে তাকে ডিবি ওয়ারী বিভাগ চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। আমরা তাদের বলেছিলাম- আপনারা এখানেই রেখে চিকিৎসা করান। কিন্তু তারা আমাদের কথা না শুনে তাকে অসুস্থ অবস্থায় সেখান থেকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করে। পরে সন্ধ্যার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় এজাজ।

এজাজের মামা অভিযোগ করে আরও বলেন, যৌথবাহিনী যখন তাকে (এজাজ) আটক করেছিল, তখন তাকে ব্যাপক মারধর করে। পরে মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করে। এরপর এজাজ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। পরে ঢাকা মেডিকেলের নেফ্রলজি বিভাগে ডায়ালিসিস অবস্থায় মারা যায় এজাজ। পরিকল্পিতভাবে এজাজকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা কাদের কাছে বিচার দিব? আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।

এদিকে এজাজের বাবা শাহ আলম খান অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ছেলেকে পিটিয়ে ও ইনজেকশন দিয়ে হত্যা করেছে। আমরা কার কাছে অভিযোগ করব, আমার ছেলে তো আর ফিরে আসবে না। তাকে আদালত থেকে জামিন করিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করালাম চিকিৎসার জন্য, কিন্তু সে শেষ পর্যন্ত মারা গেল।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত ২৭ ফেব্রুয়ারিতে তার (এজাজের) এনগেজমেন্ট হয়। সামনে তার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর সে বেঁচে ফিরল না। মৃত্যুর আগে এজাজ জানায় যৌথবাহিনী তাকে ব্যাপক মারপিট করেছে। পরে জামিনে বের হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’

এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার ওসি আলী ইফতেখার হাসান বলেন, ‘মোহাম্মদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি হত্যা মামলায় ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ডিবির একটি টিম তাকে শনিবার ভোর রাতের দিকে গ্রেপ্তার করে। পরে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যার দিকে মারা যায় এজাজ। এজাজের পরিবারের লোকজন তার মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিয়ে চলে যায়। পরে ধানমন্ডি থেকে আবার মরদেহ ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। তবে ডিবি অফিসিয়ালি ওই আসামিকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেনি।’

আরবি/এসআর

Link copied!