‘ওই কিরে, ওই কিরে’, ‘মধু মধু, রসমালাই’ বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ভাইরাল’ হন তরমুজ বিক্রেতা রনি। এরপর থেকে বেশ বেকায়দায় রয়েছেন রাজধানীর কারওয়ান এই ব্যবসায়ী। দোকানের সামনে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের ভিড়ে ঠিকমতো ব্যবসা করতে পারছেন না। একই বিপাকে অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও। তাই রনির উপর চটেছেন তারা। খুব একটা দোকানে বসছেন না ‘ভাইরাল’ রনি। বসলেও মুখে মাস্ক পরছেন।
মাস্ক পরার কারণ জানতে চাইলে রনি জানান, কেউ যেন তাকে চিনতে না পারেন, সেজন্য মাস্ক পরেছেন। ‘ভাইরাল’হওয়ার পর এখন তিনি লুকিয়ে থাকছেন। তাকে দোকানে দেখলেই ইউটিউবাররা ভিড় করেন। ভিডিও করতে চান। অনেক মানুষ ছবি তুলতে দোকানে যান। এতে তার আর তরমুজ বিক্রি করা হয় না। পাশাপাশি আশপাশের বিক্রেতারা বিরক্ত হন। এ কারণে তাকে লুকিয়ে থাকতে হচ্ছে।
রনি বলেন, ‘দোকানদারেরা বলছে, “ভাই আপনার জন্য তো আমাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে।” তাই আমি এখন দোকানে থাকতে পারতেছি না। আমার কষ্ট হোক, তবু আমার কারণে আমি কারও ক্ষতি চাই না।’
এর আগে, ভাইরাল হওয়ার পর দোকানের সামনে উৎসুক জনতা ও কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের ভিড় জমানোয় আক্ষেপ জানান রনি। এভাবে চলতে থাকলে আত্মহত্যার হুমকিও দেন। এক ভিডিওতে রনি বলেছেন, ‘আমারে এ রকম বিরক্ত করলে আমি গলায় ছুরি দিমু নয়তো ২৪ তলা থেকে পড়ে আত্মহত্যা করমু ভাই। আমার দেড় লাখ টাকার মাল পচে যাচ্ছে। আমি বিক্রি করতে পারতেছি না।’
ওই ভিডিওতে তিনি আরও বলেন, ‘আমি তো ভিডিও করার জন্য না বলি নাই। আমি ভিডিও দিব। আপনারা যা বলবেন আমি তাই শুনব, কিন্তু আমারে ভালো রাখেন। কর্ম করে খাইতে দেন ভাই। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে অনুরোধ করে বলেন, ‘আমারে বিরক্ত করবেন না ভাই।’
মুন্সিগঞ্জের বিক্রমপুরের বাসিন্দা রনির স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সংসার। কারওয়ান বাজারে প্রায় দেড় দশক ধরে মৌসুমি ফল বিক্রি করেন। তরমুজ বিক্রিতে হাতেখড়ি কিশোরকাল থেকে। তিনি বলেন, তার দাদা ও বাবা তরমুজের ব্যবসা করতেন। তাদের কাছ থেকে কোনটি পাকা, অর্থাৎ ভেতরে লাল রং ধারণ করা তরমুজ, তা চিনতে শিখেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :