‘পোশাক শিল্পের কর্মীদের স্বাস্থ্যগত উপাত্তগুলোকে নিয়মিত মনিটরিং করা জরুরি।’ আজ বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর উত্তরার বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে এ কথা বলেন বিজিএমইএ’র প্রশাসক এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস-চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন।
আয়াত এডুকেশন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ), জন সি. মার্টিন ফাউন্ডেশন এবং ইন্টিগ্রাল গ্লোবালের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতের কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্য ও সুস্থ্যতাবিষয়ক ডিজিটাল টুলকিট উদ্বোধন করেন তিনি। অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), ওয়ালমার্ট, প্রাইমার্কসহ, তৈরি পোশাক শিল্পের ক্রেতা, কারখানা মালিকরা।
এ উদ্যোগের লক্ষ্য হলো- তৈরি পোশাক খাতের কর্মীদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতা নিশ্চিতে সহায়তা, স্বাস্থ্যসম্মত জীবন গঠনে সহায়তা এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা। স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য ডিজিটাল টুলকিটটি হলো অনলাইন ব্যবহারকারীদের জন্য সহজবান্ধব একটি প্ল্যাটফর্ম, যা কর্মী ও কারখানা ব্যবস্থাপকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য তথ্য সরবরাহ করতে সক্ষম। এটি বিজিএমইএ’র ওয়েবসাইটে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় পাঠযোগ্য এবং মোবাইল ডিভাইসে ব্যবহার উপযোগী। এতে ডাউনলোডযোগ্য ভিডিও কনটেন্ট এবং কারখানার আইটি সিস্টেমের সঙ্গে ইন্টিগ্রেশন করার সুবিধা রয়েছে। এছাড়াও এতে একটি ফিডব্যাক ব্যবস্থা রয়েছে, যা প্ল্যাটফর্মের কার্যকারিতা এবং টেকসই উন্নয়নে সহায়তা করবে।
অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্বে আমন্ত্রিত অতিথি ও কারখানার মালিকরা স্বাস্থ্য এবং সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দিতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। প্রধান অতিথি মো. আনোয়ার হোসেন এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, ‘তৈরি পোশাক শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির মূলচালিকা শক্তি, যা এই শিল্পের কর্মীদের প্রচেষ্টা ও পরিশ্রমের উপর নির্ভরশীল। আয়াত এডুকেশনের স্বাস্থ্য ও সুস্থতাবিষয়ক এই ডিজিটাল টুলকিটটি একটি সময়োপযোগী এবং উদ্ভাবনী সমাধান, যা আমাদের এই শিল্পকে আরও শক্তিশালী, স্বাস্থ্যকর এবং টেকসই করবে। এই টুলকিটটির মাধ্যমে বিজিএমই ছাড়াও অন্যান্য সেক্টর উপকৃত হবে। কর্মীদের স্বাস্থ্যগত উপাত্তগুলোকে নিয়মিত মনিটরিং করা জরুরি। পাশাপাশি এই টুলকিটে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি আনলে আরও ভালো হবে। আশা করব, এই টুলকিট শুধুমাত্র তৈরি পোশাক শিল্প নয়, অন্য ক্ষেত্রেও ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে।’
আয়াত এডুকেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত ফিরোজ আমান বলেন, ‘কারখানার কর্মীদের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান এবং তথ্য-উপকরণ দিয়ে ক্ষমতায়িত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই টুলকিটটি কেবল স্বাস্থ্য সচেতনতাই বাড়াবে না, বরং এটি কর্মীদের কর্মক্ষেত্রের টেকসই পরিবেশ তৈরির পাশাপাশি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিতি কমাতে সহায়তা করবে।’
ইন্টিগ্রাল গ্লোবালের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক নাবিল আহমেদ এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব বিষয়ে বলেন, ‘সঠিক স্বাস্থ্য তথ্য ও উপকরণগুলোতে প্রবেশাধিকার একটি মৌলিক অধিকার। এই টুলকিটটি তৈরি পোশাক শিল্প খাতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসেবে তৈরি হবে, যা শ্রমিক ও কারখানার মালিক পক্ষকে কার্যকর উপায়ে স্বাস্থ্য-সুস্থতাবিষয়ক তথ্য ও উপকরণ প্রদান করবে। পাশাপাশি এটি তাদের সুস্থতা, উৎপাদনশীলতা এবং স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক হবে।’
অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিজিএমইএ’র সাপোর্ট কমিটির সদস্য শরীফ জহির বলেন, ‘আমরাও মোবাইল অ্যাপ নিয়ে কাজ করছি; আয়াত এডুকেশনের এই উদ্যোগটি রেডিমেড গার্মেন্ট সেক্টরে অগ্রগতি আনবে বলে আমার বিশ্বাস।
অনুষ্ঠানে টুলকিটটির বিভিন্ন কারিগরি বৈশিষ্ট্য ও দিকগুলো প্রদর্শন করা হয় এবং এটি কীভাবে তৈরি পোশাক খাতে কর্মরত কর্মীদের কল্যাণে ভূমিকা রাখবে তা তুলে ধরা হয়। উপস্থিত সবাই স্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন সমস্যার সমাধান এবং প্রয়োজনীয় জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা দূর করার মাধ্যমে, এই টুলকিটটি বাংলাদেশের বৃহত্তম রপ্তানি শিল্পের কর্মীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ ও পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আপনার মতামত লিখুন :