শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫, ০৬:০২ পিএম

ভাঙ্গা ঘরে ৭ বছর শিকলবন্দী মাসুদ

উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫, ০৬:০২ পিএম

ভাঙ্গা ঘরে ৭ বছর শিকলবন্দী মাসুদ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

৭ বছর ধরে লোহার শিকলে বন্দী হয়ে দুঃসহ জীবন কাটছে মাসুদ রানা’র (৩৫)। একসময়ে স্বাভাবিক জীবনের এই যুবকটি এখন মানসিক ভারসাম্যহীন। একটি ঝুপড়ি ঘরে নড়বড়ে ভাঙ্গা চোকির উপর দিন আর রাত কাটে তার। কেউ তার অসহায়ত্ব বোঝার চেষ্টা করে না। ২০০৪ সালে এসএসসি পাস করার পর তিনি কলেজে ভর্তি হবার পর থেকেই তিনি আস্তে আস্তে অসুস্থ হতে থাকেন।

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার তারাবাড়িয়া গ্রামের মৃত শফিকুল ইসলামের ছেলে মাসুদ রানা। জন্মগতভাবে তিনি স্বাভাবিক ছিলেন। উপজেলার সোনতলা তফছীর মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করার পর উল্লাপাড়া আরএস ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হন তিনি। হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন মাসুদ। পরিবার থেকে যথেষ্ট চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু কাজ হয়নি। আস্তে আস্তে মানুসিক ভারসাম্য হারাতে থাকেন। এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়, যে বাড়ির বাইরে গেলেই যেকোন কাউকে পেলে তাকে ধরে পেটাতেন। ধাওয়া দিতেন। পরে গ্রামের লোকজনের অভিযোগ অনুযোগের প্রেক্ষিতে নিরুপায় হয়ে পরিবারের লোকজন তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে ঘরে আটকে রাখছেন। আর এ অবস্থা চলছে প্রায় ৭ বছর ধরে।

মাসুদ রানা’র মাও মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। তার আছে শুধু এখন দুই ভাই দুই বোন। ভাইয়েরাই তার প্রতিপালন ও দেখাশোনা করে থাকেন। মাসুদের বড় ভাই সোহেল রানা জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে মাসুদ অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসা করানোর পরেও আস্তে আস্তে তার মানসিক ভারসাম্য হারাতে থাকে। অবশেষে এমন পাগলামি শুরু করেন যে তাকে আর শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা ছাড়া তাদের আর দ্বিতীয় কোন পথ ছিল না। এটা অত্যন্ত অমানবিক কাজ নিঃসন্দেহে। কিন্তু তারা গরীব মানুষ। তাদের যা সহায় সম্পদ ছিল সবই বিক্রি করে মাসুদের চিকিৎসা করিয়েছেন। কাজ হয়নি কিছুই। মাঝে মাঝে মাসুদ তার স্মৃতি ফিরে পান। তখন স্বাভাবিক মানুষের মতো জীবনের ফেলে আসা অনেক ঘটনার কথা ঠিকঠাক মতো বলতে পারেন মাসুদ। কিন্তু এই স্বাভাবিকতা বেশিক্ষণ স্থায়ী থাকে না। বর্তমানে মাসুদকে অমানবিক ও দুঃসহ জীবন কাটাতে হচ্ছে। পরিবারের আর কিছুই করার নেই। তারা এজন্য নিজেরাও খুবই কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করছেন। মাসুদকে ওই ঘরের মধ্যেই প্রসাব পায়খানা করানোর ব্যবস্থা করা হয়। বস্তুতঃ মাসুদ রানা’রা দুই ভাই কেউই এখন স্বচ্ছল নন। তাই এ অবস্থায় অন্ততঃ মাসুদ রানার একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেবার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান সোহেল। সেই সাথে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তারও অনুরোধ জানান তিনি।

এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, বিষয়টি তিনি আগে জানতেন না। তার পরেও কোন মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষকে অমানবিকভাবে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার কোন নিয়ম নেই। তিনি দ্রæত তদন্ত করে মাসুদ রানাকে শিকল মুক্ত ও তার প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেবার ব্যবস্থা নেবেন বলে উল্লেখ করেন।

আবু/এস

Link copied!