যমুনা নদীতে ইলেকট্রিক শক দিয়ে মাছ নিধন, হুমকিতে জীববৈচিত্র্য

সুমন কুমার সাহা, সারিয়াকান্দি

প্রকাশিত: মার্চ ২, ২০২৫, ১২:৪০ পিএম

যমুনা নদীতে ইলেকট্রিক শক দিয়ে মাছ নিধন, হুমকিতে জীববৈচিত্র্য

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির সাথে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ আর এই তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে দিনে রাতে কিছু অবৈধ চক্রের ইনভার্টারের সাহায্যে ইলেকট্রিক শক দিয়ে মাছ ধরা ও প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংসের প্রবণতা বেড়েই চলে। এভাবে মাছ শিকার অব্যাহত থাকলে মাছের সাথে অন্যান্য জলজ প্রাণীও বিলুপ্ত হওয়ার শঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

সারিয়াকান্দির যমুনা নদীর বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে দিনে রাতে চলছে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মাছ শিকার। এ পদ্ধতিতে কয়েকটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাটারির সাহায্যে পানিতে সাময়িক বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়। এ পদ্ধতিতে পানিতে বৈদ্যুতিক শকের কারণে একটি নির্দিষ্ট এলাকার সকল প্রকার জলজ প্রাণী বৈদ্যুতিক শকপ্রাপ্ত হয়।

এই ভয়ানক বৈদ্যুতিক শক পদ্ধতিতে মাছ শিকারের ফলে রেণু মাছ থেকে শুরু করে অন্যান্য জলজ প্রাণীও মরে পানির উপরে ভেসে ওঠে। অসাধু মাঝিরা তখন জাল দিয়ে এসব মাছ পানি থেকে নিজেদের নৌকায় সংগ্রহ করেন। পরে সংগ্রহকৃত মাছগুলো সারিয়াকান্দির যমুনা পাড়ের আড়ৎ বা বগুড়ার বিভিন্ন আড়ৎ এ বিক্রি করা হয়। এ পদ্ধতিতে মাছ শিকারের কারণে এ উপজেলায় দেশি মাছ আর বেশি একটা পাওয়া যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু দেশি প্রজাতির মাছ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বেশ কিছু জেলেরা জানান এ পদ্ধতিতে মাছ শিকারের ফলে তারা বেড় জালে আর আগের মতো মাছ পাচ্ছেন না।

উপজেলা কাজলা ইউনিয়নের চর ঘাগুয়ার ঘাটে দুপর ১টার দিকে নৌকা ভিড়ানোর সাথে সাথেই গণমাধ্যম কর্মীদের দেখামাত্রই নৌকা নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায় অসাধু জেলেরা। তবে কিছু কিছু নৌকা ঘাটেই বাঁধা ছিল। সেইসব নৌকাগুলোতে খোঁজ নিয়ে পাওয়া যায় বিদ্যুৎশক দিয়ে মাছ শিকারের বেশ কিছু সরঞ্জামাদি। তার মধ্যে রয়েছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বৈদ্যুতিক ব্যাটারি, বৈদ্যুতিক তার, এলইডি বাল্ব প্রভূতি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এসব নৌকার মাঝিরা সারারাত মাছ শিকারের পর কেউ মাছ বিক্রি করতে গেছেন, আবার কেউবা ঘুমাচ্ছেন। 

আরো জানা যায়, এরকম ইলেকট্রিক শক দিয়ে মাছ নিধনের ৬০ থেকে ৭০টি নৌকা রয়েছে। তারা প্রতিদিন ইলেকট্রিক শক দিয়ে নদীর ছোট ছোট মাছ ৫-১০ কেজি করে ধরে এই মৎস্য শিকারিরা।

এ বিষয়ে সারিয়াকান্দি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মুর্শিদা খাতুন বলেন, মাছ শিকারে এটি একটি ভয়াবহ পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে মাছ শিকার বন্ধে অবশ্যই আমাদের জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে এবং ক্ষতিকর দিক নিয়ে জেলেদের সাথে আলোচনা করতে হবে। এর পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে অসাধু জেলেদের আটক করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরবি/জেডআর

Link copied!