ঘোড়ার মাংসের জমজমাট ব্যবসা, কেজি মাত্র ২৫০ টাকা!

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ৮, ২০২৫, ০৫:৫০ পিএম

ঘোড়ার মাংসের জমজমাট ব্যবসা, কেজি মাত্র ২৫০ টাকা!

ছবি: সংগৃহীত

একটি নয় দুটি নয়, তিন থেকে চারটি। এটি গরু কিংবা ছাগল নয়, বলা হচ্ছে ঘোড়ার কথা।

শুনতে অবাক লাগলেও গাজীপুরে এই ঘোড়ার মাংসের ব্যবসা এখন জমজমাট। এই মাংসের দামও হাতের নাগালে। কেজিতে মাত্র ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।

এই স্বল্প দামে ঘোড়ার মাংস বিক্রি করছেন দুই বন্ধু শফিকুল ইসলাম ও নুরুল্লাহ মামুন। তাদের ঘোড়ার মাংসের দোকান গাজীপুর মহানগরের হায়দ্রাবাদ এলাকায়।

তাদের ওই দোকানে মাংসের চাহিদা বাড়ায় এখন প্রতি শুক্রবার ৩ থেকে ৪ টি ঘোড়া জবাই করা হয়।

 

দুই বন্ধু  শফিক ও মামুন জানালেন, মাংসের দামে সস্তা হওয়ায় অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন। এতে তাদের ব্যবসাও দিনদিন বাড়ছে।

ঘোড়ার মাংস দেশে তেমন পরিচিত না হলেও ইউরোপসহ মধ্যপ্রাচ্যের কিছু কিছু দেশে এটি একটি জনপ্রিয় খাবার।

দুবাই ভ্রমণ এই ঘোড়ার মাংস খাওয়ার অভিজ্ঞতা থেকেই দেশে ফিরে ব্যাতিক্রমি এই উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানালেন দুই বন্ধু।

তারা চলতি বছরের শুরু থেকেই এই মাংসের ব্যবসা শুরু করেছেন।

তবে এই ঘোড়ার মাংসের স্বাদ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

কেউ কেউ বলছেন, ঘোড়ার মাংস খাওয়া ‘অরুচিকর’। খাওয়ার ‘উপযোগী’ নয়।

তবে এই মাংস যারা নিয়মিত নিচ্ছেন তাদের অনেকেই জানিয়েছেন, ছাগল কিংবা গরুর মাংসের থেকেও সুস্বাদু ঘোড়ার মাংস।

 

অনেকেরই মতে, গরুর মাংসে ফ্যাট থাকলেও ঘোড়ার মাংসে ফ্যাট নেই। এ কারণে তারা বেশি আগ্রহী হচ্ছেন।

তাছাড়া কেজিতে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হওয়ার কারণে এই মাংসের প্রতি নিম্ন আয়ের মানুষরা বেশি ঝুকছেন।

তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দাড়িয়েছে এই মাংস খাওয়ার বিষয়ে ধর্মী বিষয়।

তবে স্থানীয় এক মাদ্রাসা পরিচালক মুফতি আবু সাইদ জানিয়েছেন, ‘ইসলামে ঘোড়ার মাংস খাওয়াতে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই।’

ঘোড়ার মাংস হালাল না হারাম?

এটি খুড়ওয়ালা স্তন্যপায়ী প্রাণী। এরসঙ্গে মানুষের সম্পর্ক বহুযুগ ধরে। এটি দ্রুতগামী চতুষ্পদ প্রাণী। পিঠে চড়া যায়। দ্রুতগামী বলে এর নাম তুরগ, তুরঙ্গম।

ঘোড়া ইসলামের ইতিহাসেও প্রদ্ধি ব্যাপক। তাই প্রশ্ন ওঠে ঘোড়ার মাংস খাওয়া যাবে কী না। এটি হালাল না হারাম।

অবশ্য এ বিষয়ে মুফতি আবদুল্লাহ তামিম বলেছেন, ঘোড়ার গোশত খাওয়া জায়েজ আছে। ঘোড়ার গোশত হালাল।

‘কিন্তু গণহারে ঘোড়ার গোশত খেলে জিহাদের সময় ঘোড়ার মাধ্যমে খেদমত নিতে সমস্যা হতে পারে। তাই ইমাম আবু হানিফা রহ. বলেছেন, ঘোড়ার গোশত খাওয়া মাকরুহ।’

বর্তমানে যুদ্ধক্ষেত্রে যদিও ব্যাপকভাবে ঘোড়ার ব্যবহার হয় না, কিন্তু তা একেবারে বন্ধও হয়ে যায়নি। এখনো অনেক দেশের সিকোরিটি ফোর্সেস তাদের কেন্দ্রগুলোতে ঘোড়ার রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে। নিয়মিত প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। 
মুফতি আবদুল্লাহ বলেন, ‘রসুল সা. ব্যাপকহারে মানুষ ঘোড়ার জবাই করে গোশত খেলে যুদ্ধের সময় ঘোড়া পাওয়া যাবে না। তাই ঘোড়ার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন মহানবী সা.। যদি এমন কোনো পরিস্থিতি হওয়ার সম্ভবনা না থাকে তাহলে ঘোড়ার গোশত খাওয়াতে কোনো সমস্যা নেই।’ 

আরবি/ফিজ

Link copied!