কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে এবার মরিচের বাম্পার ফলন হলেও কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন চাষিরা। গত বছর লাভের মুখ দেখলেও এ বছর লোকসান গুনতে হবে বলে আশঙ্কা তাদের।
এ উপজেলায় ৬ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভা থাকলেও সিদলা, জিনারী ও শাহেদল ইউনিয়নে মরিচের চাষ বেশি হয়। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মরিচের ফলন ভালো হয়েছে। তবে বাজারমূল্য কম থাকায় উৎপাদন ব্যয় ওঠা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় মোট ৪৫০ হেক্টর জমিতে শাক সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল৷ এবার গতবারের তুলনায় অধিক জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। তাই লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদনের আশা কৃষি অফিসের। এক্ষেত্রে উপজেলা কৃষি অফিস মরিচ চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
এ উপজেলায় এবার বিজলি, রোপা মরিচ, বোনা মরিচ, সিন্দি, নাগা ফায়ার হাইব্রিড মরিচের চাষ বেশি হয়েছে। মরিচ চাষে বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার থেকে ৫৫ হাজার টাকা। বর্তমানে প্রতিমণ কাঁচা মরিচ ৮শ থেকে ৯শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছর প্রতিমণ মরিচ বিক্রি হয়েছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায়। এবার মরিচের দাম গত বছরের চেয়ে অনেকটা নিম্নমুখী। তাই এই লোকসান গুণতে হচ্ছে চাষিদের।
সরেজমিনে উপজেলার আড়াইবাড়ীয়া ইউনিয়নের ধুলজুরী গ্রামে গিয়ে কথা হয় মরিচ চাষি সাদ্দাম মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, এবার ৪ কাটা জমিতে নাগা ফায়ার মরিচের চাষ করেছি। এতে আমার প্রায় লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। মরিচ ক্ষেত থেকে প্রথম দফায় ৪ মণ, দ্বিতীয় দফায় ৬ মণ ও তৃতীয় দফায় ১০ মণ মরিচ তুলেছি।
তিনি আরও জানান, শুরুতে ৭শ থেকে ৮শ টাকা মণ দরে মরিচ বিক্রয় করেছি। বর্তমানে ৯শ থেকে ১ হাজার টাকা মণ দরে মরিচ বিক্রি করতে হচ্ছে। গত বছরের লাভের অঙ্ক হিসাব করে এবার মরিচের চাষ করে লোকসানে পড়েছি।
বিশ্বনাথপুর গ্রামের কৃষক কামাল মিয়া জানান, মরিচ তুলতে যে খরচ হয়। তারপর বাহারে নিতে পরিবহন খরচ৷ সে অনুযায়ী দাম একদম কম। এবার মরিচের ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু বাজারমূল্যে একেবারেই ধস নেমেছে। যার কারণে এবার মরিচ চাষে লাভ হবে না। খরচ তোলাই কঠিন হয়ে পড়বে।
উপজেলা কৃষি অফিসার একেএম শাহজাহান কবির জানান, আমরা মরিচ, শাকসবজি চাষের জন্য কৃষকদের যথারীতি উৎসাহ প্রদান করে আসছি। অনুকূল আবহাওয়া ও সঠিক পরিচর্যায় এবার মরিচের আবাদে কোনো প্রকার রোগ বালাই আক্রমণ নেই। ফলে বাম্পার ফলন হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :