চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় দাফনের আড়াই মাস পর জীবিত অবস্থায় বাড়ি ফিরেছে তোফাজ্জল হোসেন তুফান (১৫) নামের এক কিশোর। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তুফান উপজেলার হারদি ইউনিয়নের বৈদ্যনাথপুর গ্রামের গোরস্থান পাড়ার আবু সাঈদের ছেলে।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকালে নিজ বাড়িতে ফিরে আসে সে। তার কোমরে একটি কালো রঙের দাগ রয়েছে, তা দেখেই পরিবারের সদস্যরা সে যে তুফান-সে ব্যাপারে নিশ্চিত হন। এ সময় তারা আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।
গ্রামের সাধারণ মানুষেরা বলছেন, অলৌকিকভাবে এ কিশোর বাড়ি ফিরেছে। গ্রামবাসী তাকে দেখতে তাদের বাড়িতে ভিড় করছে।
জানা যায়, প্রায় তিন মাস আগে তুফান সবার অজান্তে বাড়ি থেকে ঢাকার শ্যামলীতে চলে যায়। সেখানে দিনমজুর হিসেবে কাজ করত সে।
তার বাবা আবু সাঈদ বলেন, “আড়াই মাস আগে আমরা সংবাদ পাই, গাইবান্ধায় এক কিশোর সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। মারা যাওয়া ওই কিশোরের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে গ্রামের আটজনকে নিয়ে আমি গাইবান্ধায় ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে লাশের সঙ্গে তুফানের চেহারার মিল পাই। এরপর সেখানে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে লাশটি নিয়ে এসে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করি।”
তিনি আরও বলেন, “তুফানের মা সে সময় দাবি করেছিল যে লাশটি আমাদের সন্তানের নয়। চেহারায় মিল থাকলেও সেটি আসলে তুফানের দেহ নয়। তুফানের কোমরে কালো রংয়ের একটি দাগ ছিল, কিন্তু লাশে সেই দাগ না থাকায় তার সেটি তুফান হতে পারে না বলে জানায়।”
ওই ঘটনার আড়াই মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর শুক্রবার সকালে তুফান ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে ফিরে যায়। এ সময় সবাই তাকে দেখে বিস্মিত হয়ে পড়েন। এরপর গ্রামের লোকজন তাকে দেখতে ভিড় করেন।
তুফান জানায়, সে একাই কাজের সন্ধানে ঢাকার শ্যামলীতে চলে যায়। সেখানেই কাজ করত, সেখানেই থাকত। দীর্ঘদিন পর পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে সে বাড়িতে ফিরেছে।
বাড়িতে এসে তুফান জানতে পারে যে, তার মতো চেহারার একজনকে পরিবারের লোকজন মৃত সন্তান ভেবে দাফন করেছে।
আলমডাঙ্গা থানার ওসি মাসুদুর রহমান বলেন, “বিষয়টি আমি শুনেছি। ছেলেটি জীবিত অবস্থায় বাড়িতে ফিরে এসেছে আজ সকালে।”
আপনার মতামত লিখুন :