বুধবার, ০২ এপ্রিল, ২০২৫

১৪০০ চা শ্রমিকের মুখে হাসি ফোটালেন ডিসি

সিলেট ব্যুরো

প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২৫, ০১:৪০ পিএম

১৪০০ চা শ্রমিকের মুখে হাসি ফোটালেন ডিসি

ছবি: সংগৃহীত

আর্থিক সংকটের কারণে সিলেটের চা বাগানগুলোতে কয়েক মাস ধরে বেতন ও রেশন না পেয়ে দুঃসহ জীবনযাপন করছিলেন শ্রমিকরা। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ।

তার একান্ত প্রচেষ্টায় শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকেলে সদর উপজেলার ৪টি চা বাগানের ১৪০০ শ্রমিকের মধ্যে নগদ অর্থ ও চাল বিতরণ করা হয়।

জানা গেছে, সদর উপজেলার বুরজান, কালাগুল, ছেড়াগাং ও ফ্যাক্টরি চা বাগানের শ্রমিকরা দীর্ঘ ১৫ থেকে ১৭ সপ্তাহ ধরে বেতন ও রেশন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন।

বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নজরে এলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে চা শ্রমিকদের মাঝে নগদ ৭ লাখ টাকা ও ১৪ টন চাল বিতরণ কার্যক্রম হাতে নেন।

শুক্রবার বিকেলে এসব সহায়তা শ্রমিকদের হাতে তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজ খোশনূর রুবাইয়াৎ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাহবুবুল ইসলাম, মহানগরের এসিল্যান্ড মো. আলীম উল্লাহ খান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মেরিনা দেবনাথ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শীর্ষেন্দু পুরকায়স্থ, খাদিমনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিলোয়ার হোসেন প্রমুখ।

ইউএনও মিজ খোশনূর রুবাইয়াৎ জানান, এ সহায়তা জনপ্রতি শ্রমিককে ৫০০ টাকা ও ১০ কেজি করে চাল হিসেবে দেওয়া হয়েছে।

খাদ্য সহায়তা পাওয়ার পর বুরজান চা-বাগানের চা-শ্রমিকরা বলেন, মজুরি বন্ধ থাকার পর থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খুবই সংকটে আছি। প্রায় সময় অর্ধাহারে অনাহারে দিন পার করতে হয়। জেলা প্রশাসক, সিলেট মহোদয়ের মানবিক সহায়তা আমাদের এই কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে। আমাদের চা-বাগানের প্রায় সব বাড়িতেই এখন রীতিমতো দুর্ভিক্ষ চলছে।

ত্রাণ হাতে পেয়ে কালাগুল বাগানের একজন চা-শ্রমিক বলেন, ডিসি স্যারের আজকের এই সহায়তার ফলে অনেকদিন পর পরিবারের সবাই মিলে পেট ভরে খেতে পারব। এ খাদ্য সহায়তা পাওয়ার পর হাসিমুখে বাড়ি ফেরেন ছেড়াগাং টি এস্টেটের চা-শ্রমিকরা।

সে সময় তারা বলেন, “হামাদের ডিসি স্যার চাউল ও টেকা দিয়েছে। আমরা বাগানের সবাই খুব খুশি হয়েছি।”

চা শ্রমিকগণ এ উদ্যোগের জন্য জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানান এবং তাদের ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে আছে বন্ধ থাকা মজুরি ও সাপ্তাহিক রেশন প্রদান, বকেয়া পাওনা পরিশোধ।

এছাড়াও পেনশন, চিকিৎসা, আবাসন, খাবার পানি ও স্যানিটেশনবিষয়ক চা নীতিমালা সমর্থিত দাবি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

ত্রাণসহায়তা পেয়ে উচ্ছ্বসিত চা শ্রমিকরা জেলা প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আমাদের ডিসি স্যার চাল ও টেকা দিয়েছে। আমরা বাগানের সবাই খুব খুশি হয়েছি।

আরবি/জেডআর

Link copied!