উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা খুন, লাশ রেখে পরীক্ষার হলে মেয়ে

রাজশাহীতে তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকায় মেয়েকে উক্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ জানালে হামলা ও মারধরে মেয়েটির বাবা নিহত হয়েছেন। বুধবার রাতে (১৬ এপ্রিল) তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকার তার ওপর হামলা হয়। মেয়েটি এসএসসি পরীক্ষার্থী। সে বাবার লাশ রেখে বৃহস্পতিবার সকালে পরীক্ষার কেন্দ্রে যায়।

পেশায় বাসচালক নিহত আকরাম আলী (৪৫) নগরের তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকার মৃত আজদার আলীর ছেলে।

হত্যার ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাত ১০টার দিকে। আর ঠিক পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে এসএসসি পরীক্ষা দিতে যায় তাঁর মেয়ে আলফি আক্তার। বাবার মরদেহ দাফনের আগেই পরীক্ষার হলে বসতে হয় আলফিকে।

রাজশাহীর অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের ছাত্রী আলফি। তার পরীক্ষার কেন্দ্র রাজশাহীর শিরোইল উচ্চ বিদ্যালয়ে।

বাকৃবিতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ

বিস্তারিত পড়ুন

অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আলফি খুবই মেধাবী ছাত্রী। তার বাবাকে যেভাবে খুন করা হয়েছে, তা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

আলফির মা মুক্তি বেগম বলেন, ‘সারারাত মেয়েটা শুধু কেঁদেছে। কোনোভাবেই পরীক্ষা দিতে চাইছিল না।  বারবার বলেছে—‘বাবা নেই, আমার কিছুতেই যেতে ইচ্ছা করছে না। পরে আত্মীয়-স্বজনেরা অনেক বুঝিয়ে পরীক্ষার হলে পাঠান।’

মুক্তি বেগম জানান, তার মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করছিল তালাইমারীর বাবর আলী রোড এলাকার বখাটে নান্টু ও তার সহযোগীরা। বুধবার বিকেলে রাস্তায় আলফিকে গালাগালি করে ওই যুবকেরা।

ঘটনা শুনে আকরাম হোসেন নান্টুর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। এরপরই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে নান্টু। রাত সাড়ে ৮টার দিকে কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমে আকরামের ছেলে ইমাম হাসান অনন্তকে মারধর করে। 

জাতীয় কাবাডি দলে বগুড়ার মেয়ে সাদিকা

বিস্তারিত পড়ুন

ছেলের চিৎকার শুনে ছুটে গেলে আকরাম হোসেনকেও ঘিরে ধরে হামলাকারীরা। এক পর্যায়ে তার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করা হয়। মারাত্মক আহত অবস্থায় ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক আকরামকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নিহত আকরামের ছেলে ইমাম হাসান অনন্ত বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। আসামিরা হলেন, নান্টু (২৮), বিশাল (২৮), খোকন মিয়া (২৮), তাসিন হোসেন (২৫), অমি (২৫), নাহিদ (২৫) ও শিশির (২০)। মামলায় আরও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, ‘দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।’