শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২৫, ০৯:৪৫ পিএম

বজ্রপাত থেকে বাঁচতে নিরোধক যন্ত্র চান ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২৫, ০৯:৪৫ পিএম

বজ্রপাত থেকে বাঁচতে নিরোধক যন্ত্র চান ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী

বৈশাখের শুরুতেই মেঘলা আকাশ জানান দিয়েছে কালবৈশাখী ঝড় ও কৃষকদের আতঙ্ক বজ্রপাত। এ মাসেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃষকরা ফসলি জমির ধান কেটে উঠাবেন ঘরে।

প্রতি বছরই ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে বর্ষাকালে বজ্রপাতে অনেক মানুষ মারা যান। জেলার প্রায় সব উপজেলাতেই বিল, হাওর ও নদী রয়েছে। সেখানে গ্রামীণ পরিবেশ ও ফসলি জমি থাকায় বিস্তীর্ণ খোলা মাঠে কাজ করতে হয় কৃষকদের। ‘বজ্রপাতে মৃত্যু’ তাদের কাছে আতঙ্কে পরিণত হয়েছে।

তাই বজ্রপাত থেকে প্রাণ বাঁচাতে প্রতিটি উপজেলায় কৃষকরা বজ্রনিরোধক যন্ত্র স্থাপনে সরকারে সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ চাইছেন। গত এক দশকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে বহুজনের। তা ছাড়া বজ্রপাতে আহত হয়ে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন অনেকে।

বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় ২০১৫ সালে সরকার এটিকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা দেয়। এ ঘটনায় মৃত্যুরোধে একাধিক প্রকল্প নেওয়া হলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে এর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

যদিও ২০২২ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা কমপ্লেক্স ভবনের ছাদের ওপরে বসানো হয় বজ্রনিরোধক দণ্ড বা লাইটেনিং অ্যারেস্টার। বর্তমানে তা সচল রয়েছে বলে জানিয়েছেন আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফে মোহাম্মদ ছড়া। 

জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৯ উপজেলায় প্রায় ৩৩ লাখ ৬৫ হাজার ৬৩ জন মানুষের বসবাস।যার মধ্যে রয়েছে ৭ লাখ ১২ হাজার ৫৭ পরিবার। যার মধ্যে ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৫৬৫টি কৃষক পরিবার।

সারা দেশে গত ১০ বছরে কৃষক, শ্রমিকসহ বজ্রপাতে মারা যান ২৮৬৪ জন। ২০১৫ সালে ২২৬, ২০১৬ সালে ৩৯১, ২০১৭ সালে ৩০৭, ২০১৮ সালে ৩৫৯, ২০১৯ সালে ১৯৮, ২০২০ সালে ২৫৫, ২০২১ সালে ৩১৪, ২০২২ সালে ৩৪৬, ২০২৩ সালে ৩৪০, ২০২৪ সালে ১২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে। 

জেলার বিভিন্ন উপজেলার গ্রামগঞ্জের মানুষ নিম্নবিত্ত, যারা কৃষিতেই নির্ভরশীল। হাওর কিংবা নদীর পাশে বয়ে যাওয়া ফসলিজমি চাষ হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের দেশি-বিদেশি সবজি ও উচ্চফলনশীল মরিচ, ধানসহ নানা জাতের ফসল। এখানকার উৎপাদিত ফসল যায় সারা দেশে।

কিন্তু ঘরবাড়ি ও বৃক্ষহীন বিস্তীর্ণ খোলা মাঠে বজ্রপাতে প্রাণ হারাচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারী ও পুরুষ। এর বেশির ভাগই কৃষক ও শ্রমিক।

বজ্রনিরোধক সাধারণত ৩০-৪০ ফুট লম্বা দণ্ডে তিন-চার ইঞ্চি জিআইপি পাইপ এবং তামার তার থাকে। দণ্ডের ওপরে একটি ডিভাইস বসানো থাকে। যাকে লাইটেনিং অ্যারেস্টার বলে। এর মূল কাজ হলো নির্ধারিত ব্যাসের মধ্যে বজ্রপাত হলে তা টেনে মাটিতে নেওয়া। সারাক্ষণ সক্রিয় থাকে এ যন্ত্র। এতে করে মাঠে নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারেন চাষিরা।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে জেলার নবীনগর উপজেলার নাটঘর ইউনিয়নের কুড়িঘর গ্রামের পাশে বিলের ফসলি জমি থেকে ধান কাটতে যান আব্দুল আওয়াল। ধান কাটা শেষ করে বিলে গোসল করার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান৷

তরী বাংলাদেশের আহ্বায়ক শামীম আহমেদ বলেন, এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বজ্রপাতে মৃত্যুর খবর শোনা যাচ্ছে। দীর্ঘদিন শুনে আসছি বজ্রপাত প্রতিরোধে সরকারিভাবে জেলায় জেলায় লাখ লাখ তালগাছ রোপণের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।  

তিনি বলেন, ‘এবার দেখার বিষয় এসব প্রকল্প কত শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। তরী‍‍র পক্ষ থেকে বিভিন্ন মিষ্টির দোকান থেকে সংগৃহীত প্রায় সাড়ে চার হাজার তালের আঁটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বনবিভাগ বরাবর হস্তান্তর করা হয়। তাদের অযত্ন-অবহেলার কারণে একটি চারাগাছও তরী‍‍ বরাবর হস্তান্তর অথবা কোথাও রোপণ করতে পারেনি বনবিভাগ!’

‘এবার আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে তালের আঁটি সংগ্রহ ও রোপণ আমরা নিজেরাই করব। আমরা আরেকটি বিষয় লক্ষ করেছি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বজ্রপাত নিরোধক দন্ড স্থাপনের মাধ্যমেও বজ্রপাত প্রতিরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও তা খুবই সামান্য।’

‘বিশেষ করে হাওরাঞ্চল, বিল ও ফসলি মাঠে বজ্রপাতে মৃত্যুর হার বেশি। সে ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা প্রশাসন বজ্রপাত নিরোধক দন্ড স্থাপন করতে পারে। শহরাঞ্চলে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বিল্ডিং প্ল্যান পাসের সময় শর্ত জুড়ে দিতে পারে। এতে স্থাপনাগুলো বজ্রপাত প্রতিরোধে সহায়ক হবে।’-বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘সবশেষে একটি কথাই বলতে চাই, তা হলো, প্রাকৃতিক দুর্যোগকে প্রাকৃতিকভাবেই মোকাবিলা করতে হবে। বজ্রপাত প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম তরান্বিত করতে হবে। তালগাছ রোপণে সরকারি-বেসরকারি সম্মিলিত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণে গুরুত্ব দিতে হবে।’

বজ্রনিরোধক যন্ত্র স্থাপনের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক দিদারুল আলম রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, এ মুহূর্তে সে ধরনের কার্যক্রম  আমার জানামতে নেই। মোবাইল টাওয়ার নেটওয়ার্কজনিত কারণে বজ্রপাত বেড়ে যেতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেও হতে পারে। 

আরবি/আবু

Link copied!