টাঙ্গাইল পৌরসভার আলোচিত নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহম্মেদ আজমীকে রাজশাহীর নওহাটা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্মসচিব মো. কবীর উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানা যায়।
একই আদেশে রাজশাহীর নওহাটা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহ্জাহান আলীকে শিব্বির আহম্মেদ আজমীর স্থলে টাঙ্গাইল পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে বদলি করা হয়।
অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়, আগামী ২৯ এপ্রিলের (মঙ্গলবার) মধ্যে আজমীকে তার বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করতে হবে। অন্যথায় আগামী ৩০ এপ্রিল (বুধবার) বর্তমান কর্মস্থল হতে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিজ) বলে গণ্য হবেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে শিব্বির আহম্মেদ আজমী বলেন, এরই মধ্যে আমি অফিস আদেশের কপিটি হাতে পেয়েছি। অফিস আদেশের নির্দেশ মোতাবেক নতুন কর্মস্থলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই যোগদান করব।
উল্লেখ্য, দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ার পরেও স্বপদে বহাল হয়েছিলেন টাঙ্গাইল পৌরসভার আলোচিত বেড়াডোমা ব্রিজের দায়িত্বরত নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহম্মেদ আজমী।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) লঘুদণ্ডের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সচিব মো. রেজাউল মাকসুদ জাহেদী স্বাক্ষরিত এক আদেশে তিনি বহাল হন। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তাকে রাজশাহী নওহাটা পৌরসভায় বদলি করা হয়।
প্রকাশ, টাঙ্গাইল শহরের আলোচিত বেড়াডোমা ব্রিজের দায়িত্ব পালনকালে নির্মাণাধীন অবস্থায় ঢালাইকাজের পূর্বেই সেন্টারিং-এ ড্রইং ও ডিজাইন অনুসারে না করে গাছের বল্লী ও বাঁশের খুটি ব্যবহারে ঠিকাদারকে শুধু চিঠির মাধ্যমে নিষেধ করেন আজমী।
ঢালাই কাজ বন্ধ না করে এবং ঢালাইয়ের সময় উপস্থিত না থাকায় চরম দায়িত্বে অবহেলা করেন পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহম্মেদ আজমী। এ কারণে টাঙ্গাইল পৌরসভার ১৯৯২ সালের বিধি ৪০-এর উপ বিধি (ক) ও (খ) অনুয়ায়ী দায়িত্ব পালনে অবহেলার জন্য ওই প্রকৌশলীর নামে বিভাগীয় মামলা (নং-৪/২০২৩) দায়ের করা হয়।
পরে মামলাটি ২০২৩ সালের ১১ জুলাই শুনানিতে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি তদন্ত শুরু করলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয় এবং তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
পরে বিভাগীয় কর্মকর্তা টাঙ্গাইল পৌরসভার বরখাস্তকৃত ওই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ, কারণ দর্শানোর জবাব, বিভাগীয় মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পর্যালোচনাক্রমে বর্ণিত দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় পৌরসভার কর্মচারী চাকরি বিধিমালা ১৯৯২ এর বিধি ৪০-এর উপ বিধি ক’ ও খ; অনুযায়ী দায়িত্বে অবহেলা এবং অসদাচরণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে পৌরসভার কর্মচারী চাকরি বিধিমালা ১৯৯২ এর বিধি ৪১-এর উপ বিধি (ই) অনুযায়ী আদেশ জারির তারিখ থেকে ০১ (এক) বছরের জন্য বেতন বর্ধন স্থগিত রাখার লঘুদণ্ড প্রদান করেন এবং বরখাস্তকালীন সময় অসাধারণ ছুটি হিসেবে গণ্য করে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে বহাল রাখেন তাকে।
আপনার মতামত লিখুন :