কুষ্টিয়া বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠন নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় খোকন মোল্লা নামে জামাত কর্মী নিহত হয়েছে। সোমবার ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় খোকন মোল্লার মৃত্যু হয়। এর আগে রোববার ১২ জানুয়ারি বিকেলে মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের বুড়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের বুড়াপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠন নিয়ে কয়েকদিন ধরেই ইউনিয়ন জামায়াতের আমির নাসিম রেজা মুকুল ও স্থানীয় বিএনপি কর্মী রাশেদ মাহমুদ নাসিরের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। তারা দুইজনেই কমিটির আহ্বায়ক প্রার্থী ছিলেন। অ্যাডহক কমিটি থেকে নাম প্রত্যাহারের জন্য মুকুলের উপরে চাপ সৃষ্টি করছিল নাসির। এ নিয়ে বিরোধের জেরে শনিবার রাতে মুকুলকে হুমকি দেয় নাসির। এরই প্রতিবাদে রবিবার বিকেলে বুড়াপাড়া স্কুল মাঠে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে স্থানীয় জামায়াত ইসলামীর নেতা কর্মীরা। প্রতিবাদ সভায় কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুল গফুর উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিএনপি কর্মী নাসিরের সমর্থকরা সেখানে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও উত্তেজনা শুরু হয়। একপর্যায়ে মাসিরের নেতৃত্বে তার লোকজন হামলা চালায়। এতে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের উদ্ধার করে ৬ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ১২ জনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সুজাউদ্দিন জোয়ার্দ্দর বলেন, বিদ্যালয়ের এডহক কমিটিতে জামায়াতের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন জামায়াতের আমীরের নাম দেওয়া হয়। অথচ বিএনপি নেতা নাসির তাকে নাম তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেয়। এরই প্রতিবাদে সমাবেশ করার সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। হামলায় অনেকে আহত হয়।
মিরপুর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব রহমত আলী রব্বান বলেন, নাসির এক সময় ছাত্রদল নেতা ছিলেন। এখন তিনি বিএনপির কর্মী। ঘটনাটি স্থানীয় দুই পক্ষের তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. হাসান ইমাম বলেন, হাসপাতালে যারা চিকিৎসা নিচ্ছে তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রত্যেকে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, একটি স্কুল ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অনেকে আহত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :