ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বন্যায় লাকসামে মৎস্য খাতে ক্ষতি ১শ কোটি

মোজাম্মেল হক আলম, লাকসাম

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৪, ০৬:৫৭ পিএম

বন্যায় লাকসামে মৎস্য খাতে ক্ষতি ১শ কোটি

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

কুমিল্লা: কুমিল্লার লাকসামে স্মরণকালের বন্যা ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়ে ভেসে গেছে মৎস্যচাষিদের স্বপ্ন। উপজেলা মৎস্য অফিসের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এ উপজেলায় প্রায় ১৪শ হেক্টর জমিতে ৪ হাজার, ৪ শত, ৭০টি পুকুর ও দিঘি এবং ১৬টি মৎস্য হ্যাচারী রয়েছে। এসব মৎস্য খামার বন্যায় প্লাবিত হয়ে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১শ ১০কোটি টাকা।

মৎস্যচাষিরা জানান, এলাকার বেশির ভাগ মৎস্যচাষি ব্যাংক ও এনজিও থেকে লোন নিয়ে এ ব্যবসা করেছেন, আবার অনেকে নিকটতম আত্মীয় স্বজন থেকে ধার-দেনা করেও এ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। কিন্তু হঠাৎ এমন ভয়াবহ বন্যা নিঃস্ব হয়ে পথে বসতে হবে এটা কখনও স্বপ্নেও ভাবেনি মাছ চাষিরা।

মৎস্যচাষী কামাল হোসেন বলেন, ‘বন্যার পানিতে ভেসে গেছে আমার প্রায় ২০ লাখ টাকার মাছ। ব্যাংক লোন ও ধার দেনা করে এ টাকা মাছ চাষে ব্যয় করেছি। ভয়াবহ বন্যায় কেড়ে নিয়েছে আমার সর্বস্ব। এখন কীভাবে ধার-দেনা শোধ করবো কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছি না।’

মৎস্যচাষী সোলায়মান মিয়া বলেন, মাছ চাষের পাশাপাশি মাছের খাদ্য ব্যবসাও করছিলাম। আমার সকল প্রজেক্টের প্রায় ৬০ লাখ টাকার মাছ চলে গেছে। কিভাবে এ দেনা পরিশোধ করবো খুব হতাশার মধ্যে আছি। সরকার যদি মৎস্য চাষিদের একটু সহযোগিতা করে তাহলে হয়তো আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবো।

মৎস্যচাষি গিয়াস উদ্দিন বলেন, বন্যায় আমার প্রায় ৭০ টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে। কেড়ে নিয়েছে আমার পরিবারের স্বপ্ন। মাছ চাষের পেছনে আমার কাছে যতটুকু অর্থ ছিল সব ব্যয় করেছি। পাশাপাশি আত্মীয় স্বজনদের থেকে ধার-দেনা করেছি। এ বন্যা জীবনটা লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে গেছে। ভবিষ্যতে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবো কি না আল্লাহ ভালো জানেন।

লাকসাম উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. শওকত আলী বলেন, এবারের বন্যায় উপজেলা মৎস্যচাষি ও খামারীদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মৎস্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান মতে লাকসাম উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে বন্যায় প্লাবিত হয়েছে ৪ হাজারেরও অধিক, মৎস্য খামার, পুকুর-ডোবা এবং ১৬টি মৎস্য হ্যাচারী। এসব জলাশয়ের আয়তন প্রায় ১৪‍‍`শ হেক্টর। এতে মৎস্য খামারিদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১‍‍`শ ১০কোটি টাকার মতো। মৎস্যচাষিদের ক্ষতি নিরসনে মাঠ পর্যায়ে নিরলসভাবে মৎস্য অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে এবং তাদের তালিকা অধিদপ্তরে পাঠানো হচ্ছে।

আরবি/জেডআর

Link copied!