মুন্সীগঞ্জে গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের সাথে যোগ দিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে রিয়াজুল ফরাজি নামে এক শ্রমিক নিহতের ঘটনায় মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লবকে প্রধান আসামি করে ২০৮ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। এছাড়াও তিন শতাধিক অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের নিহতের স্ত্রী রুম বেগম।
আজ মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান। কো কোতিনি জানান, নিহতের স্ত্রী রুমা বেগম বাদী হয়ে সাবেক সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লবকে প্রধান করে ২০৮ জনকে এজাহারনামিয় আসামি ও ৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা করে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা দায়েরের জন্য একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে পর্যালোচনা করে সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে মামলাটি গ্রহণ করা হয়।
এ মামলার অন্যান্য আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য গজারিয়া উপজেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান মনসুর আহমেদ খান জিন্না, মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আফসার উদ্দিন ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক শামসুল কবির মাস্টার, মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান সোহেল, জেলা ছাত্রলীগ সাবেক সভাপতি ফয়সাল মৃধা, সদর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. সুরুজ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক লালুম রাঢ়ী, শহর ছাত্রলীগ সভাপতি নছিবুল ইসলাম নোভেল, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাত হোসেন সাগর, সরকারি হরগঙ্গা কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি নিভির আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মিয়া, মিরকাদিম পৌরসভা সাবেক মেয়র মো. শহীদুল ইসলাম শাহীন, পঞ্চসার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা, রামপাল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাচ্চু শেখ, মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রিপন হোসেন পাটোয়ারী, চরকেওয়ার ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি বাবু কাজী, আধারা ইউনিয়ন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আশরাফ সুমন সহ দুই শতাধিক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট সকালে জেলা সদরের চরাঞ্চল থেকে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, তার পুত্র সাবেক সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লব ও তার স্ত্রী মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র চৌধুরী ফাহরিয়া আফরিনের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার জন্য অস্ত্র-ককটেল নিয়ে শহরে প্রবেশ করেন ২-৩ হাজার দলীয় নেতাকর্মী ও অনুসারী। আগের দিনই তারা মোবাইল ফোন ও সাক্ষাৎয়ে এই নির্দেশ পান। এ ঘটনা রিয়াজুল সহ আরও তিনজন নিহত হয়। এছাড়া তিন সাংবাদিক সহ দেড়শতাধিক আহত হয়েছে।
এদিকে এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলেছেন, ৪ তারিখে সুপারমার্কেট এলাকায় হত্যাকাণ্ডের হুকুমদাতা ও জড়িতরা কেউ যেন মামলা থেকে রেহাই না পায়। জড়িত কেউ বাদ গেলে শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলন গড়ে তুলবে। তারা বলেন, ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে যেন মামলায় না জড়ানো হয় সেটিও খেয়াল রাখতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :