হবিগঞ্জের মাধবপুরের নিম্ন অঞ্চলের কৃষকরা রোপা আমন আবাদে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এ বছর বর্ষা মৌসুমে শেষের দিকে হঠাৎ
বন্যায় উপজেলার আন্দিউড়া, বুল্লা, ছাতিয়াইন, বাঘাসুরা, আদাঐর ও জগদীশপুর ইউনিয়নের ভাটি এলাকার নিম্নভূমি তলিয়ে যায়। এতে করে সহস্রাধিক একর বোনা আমন ও পাট জমি বন্যার পানিতে বিনষ্ট হয়ে পড়ে। কিন্তু পানি কমতে শুরু করায় আশায় বুক
বেধে ধার কর্জ করে রোপা আমন আবাদ করে কৃষকরা ঘুরে দাঁড়াবার চেষ্টা করছে। তবে যত সংকট আমন ধানের চারা নিয়ে।
বন্যায় অনেক এলাকার বীজতলা তলিয়ে গিয়ে সম্পূর্নভাবে বিনষ্ট হয়ে গেছে। তাই কৃষকরা উজান এলাকা থেকে চড়া মূল্যে চারা
সংগ্রহ করে জমিতে রোপন করছেন। মাধবপুরে ইটাখোলা বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) খামারে বন্যা জনিত সমস্যা মোকাবেলায় কৃষকদের মধ্যে উন্নতমানের চারা বিতরণের নির্দেশ থাকলেও কৃষকরা এ খামার থেকে পর্যাপ্ত ধান গাছ চারা সরবরাহ পাচ্ছে না বলে কৃষকদের অভিযোগ। এ খামারে বন্যা বা দুর্যোগ মোকাবেলায় কৃষি ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ধান বীজের চারা করা হয়নি। এ কারণে মাধবপুরে খামার থেকে চারা সংগ্রহ করতে পারছে না। এরপরেও কৃষকরা দমে নেই। পানি নামার পর উর্বর ভূমিতে আমন ধানের চারা লাগাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এদিকে ইউরিয়া সার নিয়ে কৃষকরা রীতিমতো দীর্ঘ দিন ধরে বেকায়দায় পড়েছেন। বাজারে চিকন দানার ইউরিয়া সার সরবরাহ কম থাকায় বিভিন্ন এলাকা থেকে অধিক মূল্যে কালো বাজারে চিকন দানার সার আনতে বাধ্য হচ্ছে কৃষকরা। সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, চিকন দানার ইউরিয়া সারের সরবরাহ ডিলারদের কাছে কম থাকায় বাধ্য হয়ে কৃষকরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানী করা মোটা ইউরিয়া সার ব্যবহার করছে।
মাধবপুর বাজারের জালাল ট্রেডার্স এর স্বত্বাধিকারী মো. জালাল খান জানান, ইউরিয়া সার ১৩শ থেকে ১৩৫০ টাকায়, পটাশ ১৩শ টাকা, ডেব ১০৫০ টাকা এবং টিএসপি ১৩৫০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাধবপুরের বিসিআইসির ডিলারগণ জানান, তারা চাহিদা অনুযায়ী চিকন দানার ইউরিয়া সার পাচ্ছেন না। ক্ষেত খামারে এখন সনাতন পদ্ধতির গরু লাঙ্গল জোয়াল দিয়ে চাষ পদ্ধতি নেই বল্লেই চলে। আধুনিক পদ্ধতি কলের লাঙ্গল (ট্রাক্টর) দিয়ে চলছে জমি চাষাবাদের কার্যক্রম। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষাবাদ করা হচ্ছে। সার, বীজ, ডিজেল সহ কৃষি উপকরনের মূল্য বৃদ্ধির কারনে কৃষকদের মধ্যে কিছুটা হতাশা রয়েছে।
মাধবপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সজিব সরকার জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হলেও এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। চলতি রোপা আমন মৌসুমে যা লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :