ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

চাঁদপুরে ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি, দুর্ভোগ চরমে

চাঁদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৪, ০৪:২৫ এএম

চাঁদপুরে ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি, দুর্ভোগ চরমে

ছবি: সংগৃহীত

গত চারদিনের ভারী বৃষ্টিতে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন চাঁদপুর সেচ প্রকল্প এলাকার বাসিন্দারা। শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। যার ফলে লোকজন খাবারের কষ্ট এবং গৃহপালিত পশু নিয়ে খুবই দুর্বিসহ দিনযাপন করছেন। একই সঙ্গে গত দুইদিন এসব এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যহত হচ্ছে। জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সদর উপজেলার বাগাদী, ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা, কড়ইতলি, পৌরসভা, গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, অতি বৃষ্টির কারণে বহু ঘর বাড়ি ও সড়ক পানিতে নিমজ্জিত। এখন পর্যন্ত চাঁদপুর জেলার ৩১টি ইউনিয়নে ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

এদিকে চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের সদর উপজেলার বাগাদি পাম্প হাউজ পানি নিষ্কাশনে দিন ও রাতে সেচ কার্যক্রম অব্যাহত হচ্ছে। তবে জোয়ারের সময় মেশিনগুলো বন্ধ রাখতে হচ্ছে।

বাগাদি ইউনিয়নের বাসিন্দা রহমান হোসেন জানান, গত ৪ দিনের বৃষ্টিতে আমার তিনটি ঘরে পানি ওঠায় গবাদি পশু নিয়ে আছি খুবই বিপাকে। রান্নাও করা যাচ্ছে না। বিদ্যুৎ নেই গত দুদিন। আমাদেরকে কেউ এসে খোঁজ খবরও নেয় না। একই এলাকার বাসিন্দা সালমা জানান, জলাবদ্ধতায় পরিবারের সদস্যরা খুবই কষ্ট আছেন। পানি কমছে না। তিনি সরকারি সহায়তা কামনা করেন।

ফরিদগঞ্জ বালিথুবা ইউনিয়নের চান্দ্রা বাজার এলাকার বাসিন্দা আশিকুর জানান, অতিবৃষ্টিতে আমাদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সবকিছুই পানির নিচে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে সবকিছুই পানিতে তলিয়ে যাবে। ওই ইউনিয়নের মদনের গাঁও গ্রামের সৈয়দ গাজী জানান, টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা হয়ে গ্রামের অনেকেই পানিবন্দি। রাস্তায় পানি থাকায় বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না।

চরবাগাদি পাম্প হাউজের মেশিন অপারেটর মো. হুমায়ুন কবির জানান, আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করছি পানি নিষ্কাশনের। দিন ও রাতে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। বর্তমানে সেচ প্রকল্পের ভেতরে পানির লেভেল ৩ দশমিক ৯৫ থেকে ৪ দশমিক ২০ মিলিমিটার। এটি বাড়ছে এবং কমছে।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌলি মন্ডল জানান, অতিবৃষ্টির কারণে উপজেলার প্রায় সবগুলো ইউনিয়নের লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজ খবর নিচ্ছি। আমাদের সকল দপ্তরের কর্মকর্তারা কাজ করছেন।

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মো. রহুল আমিন জানান, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সেচ প্রকল্প এলাকায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা অব্যাহত রেখেছি। পানি কমালেও বৃষ্টিতে আবার একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের পাম্প হাউজ ছাড়াও প্রকল্প এলাকার হাজিমারা পাম্প হাউজ দিয়ে পানি নিষ্কাশন করা হচ্ছে। আশা করি বৃষ্টি কমলে দুদিনের মধ্যে পানি স্বাভাবিক অবস্থায় চলে আসবে।

চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির আহমেদ জানান, টানা বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতায় জেলার কয়েকটি উপজেলায় লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধ নরজদারিতে রাখা হয়েছে। পদ্মা-মেঘনার পানির বর্তমান লেভেল হচ্ছে ৩.৭৮ মিলিমিটার।

 

আরবি/জেডআর

Link copied!