লক্ষীপুরের রায়পুর উপজেলায় গত কয়েক দিনের টানা প্রবল বর্ষণে পানির নিচে তলিয়ে গেছে প্রায় ৩ হাজার পানের বরজ। পানের বরজ গুলো প্রায় ৪ থেকে ৫ ফুট পানির নিচে ডুবে গেছে। উপজেলার দশটি ইউনিয়নের মধ্যে ১ নং চর আবাবিল ৮নং উত্তর চরবংশী ও ৯ নং দঃ চর আবাবিল ইউনিয়নে সব চেয়ে বেশি পান চাষ হয়। হাজার খানেক পরিবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই পান বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। বন্যার ফলে মানবেতর জীবন যাপন করছে পান ব্যবসার সাথে জড়িত মালিক ও শ্রমিকরা।
ভেসে গেছে কয়েক হাজার পানের বরজ ও ঘর বাড়ী। এতে করে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। উপজেলায় মাছ চাষিদের পরেই বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পান চাষিদের।
পান চাষি নুরুল আমিন, আনোয়ার হোসেন, বিপ্লব মিশ্র, দোলোয়ার হোসেন, আনন্দ মজুমদার, মানিক কর্মকার ও প্রবীর কৃত্তনিয়া জানান, তাদের প্রায় ২ লক্ষ পানের বরজে অন্তত ৫০ লক্ষ টাকার পান বরজের লতা পানিতে পঁচে গেছে। পানের পাশাপাশি কয়েক হেক্টর জমির ধানের বীজতলা ও শাক সবজির বীজতলা গভীর পানিতে তলিয়ে গিয়ে নষ্ট হয়েছে বলে জানান কৃষকরা।
রায়পুর ৯ নং দঃ চর আবাবিল বাসিন্দারা বলছেন, পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় এবং বাড়ির আশেপাশে খাল ও নালা ভরাট করার কারনে সামান্য বৃষ্টিতে ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা বর্ষার মৌসুমে ডুবে যায়। গত ৭ দিনের প্রবল বর্ষন ও জোয়ারের পানিতে উপকুলীয় এলাকার নিম্মাঞ্চল সমুহ ৪ থেকে ৫ ফুট প্লাবিত হয়েছে।এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ স্থানে রাস্তা ঘাট ও কাঁচা পাকা ঘরের সামনে কোমর পরিমান পানি দেখা গেছে। বিভিন্ন এলাকায় ঘরে ঢুকে গেছে পানি। এতে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন পান চাষিরা।অনেকে বিভিন্ন এনজিও থেকে টাকা নিয়ে আবার অনেক চওড়া সুদে দাদন নিয়ে পান চাষ করেছেন বলে জানিয়েছেন চাষিরা। এই ক্ষতি তারা কি ভাবে কাটিয়ে উঠবেন এবং এনজিও ও মহাজনের টাকা কি করে পরিশোধ করবেন তা তারা বুঝতে পারছেনা।
রায়পুর ৯নং ইউনিয়ন ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও পান চাষি আলমগীর হোসেন বলেন, পানি নিষ্কাশনের ব্যপারে কোন কার্যকরি পদক্ষেপ না নেয়ার কারনে আজকের এই জলাবদ্ধতা। তার সাথে রয়েছে অপরিকল্পিত ভাবে খাল,নালা ভরাট করে ঘরবাড়ি তৈরি করে জলাধার ভরাট করার কারনেই আজকের এই পরিস্থিতি। আমি চাই এবারের পরিস্থিতি মাথায় রেখে জলাবদ্ধতা নিরসনের ব্যবস্হা করে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত করার স্হায়ী সমাধান করা। পাশাপাশি আমাদের এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তার সহযোগিতা প্রার্থনা করি।