ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

হবিগঞ্জে ১৩ গ্রামে সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ৩ শতাধিক

সায়েদুজ্জামান জাহির, হবিগঞ্জ

প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২৪, ০৮:০২ পিএম

হবিগঞ্জে ১৩ গ্রামে সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ৩ শতাধিক

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার মিরপুর বাজারে পাওনা টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটি  জের ধরে দুই দফায় ১৩ গ্রামবাসীর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়েছে। মঙ্গলবার টানা  ৭ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে মিরপুর বাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় সাংবাদিক, পুলিশসহ কমপক্ষে ৩’শ জন আহত হয়েছেন। এ সময় একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়া হয়। আহতদেরকে বাহুবল ও হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল  সোমবার রাতে আরও ৩ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার সন্ধ্যা  উপজেলার মিরপুর বাজারে পাওনা টাকা চাওয়া নিয়ে লামাতাসী গ্রামের দর্জি আলফু মিয়ার সাথে বানিয়াগাঁও গ্রামের আকল আলীর ছেলে আল আমিনের কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি সমাধান করার জন্য বানিয়াগাঁও গ্রামের আব্দুস শহীদ মিয়ার ছেলে সাদ্দাম মিয়া এগিয়ে আসলে  তার উপর অতর্কিত হামলা চালায় আলফু মিয়ার লোকজন। এ খবর উভয় পক্ষের গ্রামের লোকজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে  লামাতাশি ও বানিয়াগাঁও গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও ইট পাঠকেল নিয়ে মিরপুর বাজারে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষ মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে লোকজনকে নিজ নিজ এলাকার পক্ষে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার আহবান জানায়। লামাতাশি গ্রামের পক্ষে ৫ গ্রাম এবং বানিয়াগাঁও গ্রামের পক্ষে ৮ গ্রামের লোকজন সংষর্ষে যোগ দেয়। রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষ চলে।এরপর সেনাবাহিনী এবং পুলিশ দুপক্ষ কে  শান্ত করে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে ফের উক্ত ঘটনার জের ধরে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। পরে চুনারুঘাট উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ লিয়াকত হাসানসহ স্থানীয় মুরুব্বীরা ঘটনাস্থলে পৌছে সালিশের আশ্বাস দিয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত করেন। এ সময় সেনাবাহিনীর  একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-মৌলভীবাজার সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করে।

সংঘর্ষে বাহুবল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান আহত হন। তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে কথা বলতে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সম্ভব হয়নি।

হবিগঞ্জে সেনাবাহিনীর দায়িত্বরত একজন কর্মকর্তা জানান, সালিশে বিষয়টি নিস্পত্তি করার আশ্বাসে পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে। সেনাবাহিনী রাস্তা থেকে লোকজনকে সরিয়ে দিয়েছে। সড়কে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।

চুনারুঘাট উপজেলার সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ লিয়াকত হাসান বলেন, স্থানীয় মুরুব্বী ও জনপ্রতিনিধির সহায়তায় সালিশ মানানো হয়েছে। আমরা দু’পক্ষের সাথে আলোচনা করেছি। আজই দুপক্ষের সাথে পৃথকভাবে আলোচনা করে কবে, কিভাবে সালিশ করা হবে তা ঠিক করবো।

আরবি/জেডআর

Link copied!