ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

জমি সংক্রান্ত বিরোধীদের জের, সরকার পতনের পর বাড়িঘরে হামলা ও লুট

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২৪, ০১:৩১ পিএম

জমি সংক্রান্ত বিরোধীদের জের, সরকার পতনের পর বাড়িঘরে হামলা ও লুট

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

মুন্সিগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলার পঞ্চসারে জমি সংক্রান্ত বিরোধীদের জেরে মারধর করে বাড়িঘর ভাঙচুর, পরে লুট-পাটের অভিযোগে উঠেছে প্রতিপক্ষ আয়েত আলী দেওয়ান, তার ভাই ও ছেলের বিরুদ্ধে। গত ৫ আগস্ট মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের ফিরিঙ্গ বাজার এলাকায় মনির হোসেনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় বাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় আইনের সহযোগিতার জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছে ভুক্তভোগী মনির হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা। 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর তাদের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে স্থানীয় বিএনপি নেতারা তাদের মারধর করে। পরে তাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ঘরে থাকা সকল জিনিষপত্র লুটপাট করে। দুইটি বসত ঘর ভেঙে সকল কিছুই নিয়ে যায়।

এজাহার ও ভুক্তভোগী মনির হোসেনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের ফিরিঙ্গি বাজার এলাকার মো. আয়েত আলী দেওয়ান, তার ভাই আব্বাস আলী দেওয়ান ও তার ছেলে আলি দেওয়ান সাথে বাড়ির পার্শ্বস্থ একটি জমি নিয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর সাব-জজ কোর্টে ১টি মামলা বর্তমানে চলমান রয়েছে। ওই মামলার কারণে  ইতিপূর্বে  মনির হোসেন (বাদি) বাড়িতে বেশ কয়েকবার হামলা করে। এতে মনির হোসেন-আয়েত আলীর বিরুদ্ধে আদালতে ১৪৪ ধারায় একটি মামলা করে। ওই মামলায় আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে আর কখনো হামলা করবেনা বলে মুচলেকা দেয়। তার পরেও দিনের পর দিন আয়েত আলী, তার ভাই ও ছেলে মনিরকে প্রায়ই প্রাননাশের হুমকি নিয়ে আসছিল।

কিন্তু গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর সন্ধ্যার দিকে পঞ্চসার ফিরিংগি বাজার এলাকার বাসিন্দা আয়েত আলী দেওয়ান তার ভাই আব্বাস আলী দেওয়ান ও আয়েত আলী দেওয়ানের ছেলে আলি দেওয়ান নেতৃত্বে প্রায় শতাধিক লোক লাঠিসোঠা চাপাতি, দেশিয় অস্ত্র, রামদা নিয়ে মনির হোসেনের ৭০ বছরের পুরাতন বসতবাড়িতে অতর্কীত হামলা করে। তারা মনিরের বাড়ীতে ঢুকে পরিবারের সমস্ত সদস্যদের মারধর করে। তারা মনিরের স্ত্রী, সন্তানকে পিস্তল ঠেকিয়ে মারধর করে। মনিরের স্ত্রী ও সন্তানদের মারধর থেকে রক্ষা  করতে গেলে মনিরের শ্যালকে চাপাতি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে এবং মাথায় কোপ দিয়ে গুরুতর আহত করে। এতে মনিরের শ্যালকের  মাথায় ২৭টি সেলাই লাগে। পরে আয়েত আলী দেওয়ান তার ভাই ও ছেলে তাদেরকে জোড়পূর্বক এক কাপড়ে বাড়ী থেকে বের করে দিয়ে বাড়িতে থাকা আট ভরি স্বর্ণের গহনা, দুটি রেফ্রিজারেটর, নগদ তিন লাখ টাকা, একটি টেলিভিশন, একটি ল্যাপটপ, কম্পিউটার, দুটি মোবাইলফোন, বাড়ির প্রয়োজনীয় দলিল পত্র, ব্যাংকের লেনদেনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, চেক, পাসপোর্ট, দুটি বসতঘর, জাল তৈরির কারখানার যন্ত্রপাতি সহ দুটি গোডাউন ঘরের যাবতীয় আসবাবপত্র এবং ঘর দরজা সব ভেংগে লুট করে নিয়ে যায়। 

ভুক্তভোগী মনির হোসেন বলেন, এত অত্যাচার ও নির্যাতনের পরও এখনো আমার বাড়িতে যেতে পারি না। তারা বিভিন্নভাবে আমাকে ও পরিবারের সদস্যদের হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আমি আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এর সুস্থ বিচার দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আয়েত আলী দেওয়ানের সাথে কথা হলে তিনি এই বিষয়ে বলেন, সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ করার পর আমি তাদের সাথে জায়গার দলিলপত্র নিয়ে কথা বলেছি। আমি আমার জায়গা বুঝে নিয়েছি।তারা এতদিন দখল করেছিল।

আরবি/জেডআর

Link copied!