ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

তিন মাস পর সুন্দরবনের দুয়ার খুলছে রোববার

মেহেদী হাসান নয়ন, বাগেরহাট

প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২৪, ১১:৩৭ পিএম

তিন মাস পর সুন্দরবনের দুয়ার খুলছে রোববার

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বাগেরহাট: টানা তিন মাসের নিষেধাজ্ঞার পর আগামী রোববার থেকে বনজীবী ও পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে সুন্দরবন। দীর্ঘ বিরতির পর সুন্দরবনের ভেতরে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে খুলনার সুন্দরবন–সংলগ্ন বনজীবী পরিবারগুলোতে।

দীর্ঘদিন পর আয়-রোজগারের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় সুন্দরবন কেন্দ্রিক পেশাজীবীদের মধ্য স্বস্তি ফিরে এসেছে। কেউ নতুন করে জাল বুনছেন, কেউ পুরোনো জাল মেরামত করছেন। আবার কোথাও চলছে নৌকা-ট্রলার প্রস্তুতের শেষ মুহূর্তের কাজ।

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে জলভাগের পরিমাণ ১ হাজার ৮৭৪ দশমিক ১ বর্গ কিলোমিটার, যা পুরো সুন্দরবনের আয়তনের ৩১ দশমিক ১৫ শতাংশ। সুন্দরবনের জলভাগে ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া পাওয়া যায়। জুন থেকে আগস্ট-এই তিন মাস প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনের নদী ও খালে থাকা বেশির ভাগ মাছ ডিম ছাড়ে। 

এ কারণে গত ১ জুন থেকে তিন মাসের জন্য জেলে ও পর্যটকদের সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বন বিভাগ। রবিবার থেকে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে।

সুন্দরবন–সংলগ্ন গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, জেলে নৌকাগুলো নদীর তীরে সার করে বাঁধা। অনেকেই শেষবারের মতো নৌকা ও মাছ ধরার ছেঁড়া জাল মেরামতের কাজ করছেন। এখন তাঁরা সুন্দরবনে গিয়ে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় রসদ কেনার টাকা জোগাড়ের কাজে ব্যস্ত। অনেক জেলেই চড়া সুদে টাকা নিচ্ছেন কারবারিদের কাছ থেকে। কেউবা এনজিও ও বিভিন্ন সমিতি থেকে ঋণ করছেন।

মানিক সরকার নামের একজন বলেন, তিন মাস বনে ঢুকতে পারিনি। এই সময়ে অন্য কোনো কাজ ছিল না। সরকারেরও পরিবর্তন হইছে। আগের সরকারের সময় সুন্দরবনের জেলেদের কোনো সহায়তা দেওয়া হয়নি। মহাজনদের কাছ থেকে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ সুদেও টাকা নিয়েছে অনেকে। খুব কষ্টে কেটেছে। রোববার থেকে সবাই বনে যেতে পারব। আমার নৌকা, জাল মেরামতের কাজ শেষ করেছি।’এখন নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে মাছ ও কাঁকড়া ধরে ঋণ পরিশোধের আশা তাঁর।

পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটনকেন্দ্রের ওসি হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, সুন্দরবন শুধু জীববৈচিত্র্য নয়, মৎস্য সম্পদেরও আধার। ১ সেপ্টেম্বর থেকে জেলে ও পর্যটকদের সুন্দরবনে ঢোকার পাস (অনুমতি) দেওয়া হবে। নির্ধারিত ফরেস্ট স্টেশনগুলোকে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। এ জন্য আগে থেকে জেলে–বাওয়ালিরাও প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অনুমতিপত্রের মেয়াদ অনুযায়ী, জেলেরা সুন্দরবনে অবস্থানকারী জেলেদের তালিকা বনরক্ষীদের ক্যাম্প কর্মকর্তার কাছেও থাকবে। বনরক্ষীরা তালিকা অনুযায়ী প্রতিটি খালে টহল দিয়ে অনুমোদন পাওয়া জেলের নৌকা যাচাই করে দেখবেন।

 

আরবি/জেডআর

Link copied!