ফেনী: ফেনীতে ভয়াবহ বন্যায় জেলার বিভিন্ন সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে কৃষি, যোগাযোগ ও অবকাঠামো খাতে ব্যাপক ক্ষতচিহ্ন দৃশ্যমান হচ্ছে। সোনাগাজী উপজেলায় ছোট ফেনী নদীর ওপর নির্মিত সাহেবের ঘাট সেতুর পশ্চিম অংশের সংযোগ সড়ক বন্যার পানির চাপে ভেঙে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী জেলায় বন্যায় গ্রামীণ, আঞ্চলিক ও মহাসড়কে ১৪০ কোটি ৪৮ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে। যান চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ভাঙনের ফলে অধিকাংশ সড়কে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বন্যায় এলজিইডি ও সড়ক বিভাগের আওতাধীন সড়কের আনুমানিক ক্ষতি ১৪০ কোটি ৪৮ লাখ টাকার বেশি। স্বল্প মেয়াদে ২টি বন্যা ও দীর্ঘ মেয়াদের ভয়াবহ এ বন্যায়
এখনো গ্রামীণ সড়কগুলো নিমজ্জিত রয়েছে পানিতে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, জেলার ছয় উপজেলায় এলজিইডির চার হাজার ৩৫৬ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে তিন হাজার ৩০৫
কিলোমিটার পানিতে তলিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছে। এতে আনুমানিক ৯৯ কোটি ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহমুদ আল ফারুক বলেন, বন্যার ভয়াবহতা সব জায়গায় আঘাত করলেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে নিচু এলাকাগুলো। বন্যায় প্রায় ৫শ কিলোমিটারের বেশি সড়কের বিভিন্ন অংশে ভেঙে গেছে। অন্তত ৪০টি ব্রিজ-কালভার্টের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শীঘ্রই ক্ষতিগ্রস্থ সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হবে।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের তথ্য মতে, বন্যায় জেলার ১৯টি সড়কের মধ্যে প্রায় সবগুলোই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এতে আনুমানিক ৪০ কোটি ৯৮ লাখ ৪৭ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যার মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চার কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য সড়কগুলো পানিতে নিমজ্জিত থাকায় বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ফুলগাজীর নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ আসিফ মাহমুদ বলেন, জগতপুর-মনিপুর সড়কটি উপজেলা এলজিইডির এক নম্বর তালিকাভুক্ত সড়ক ছিল। বন্যায় এটি খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। একইভাবে উপজেলার প্রায় সবগুলো সড়ক বন্যার পানিতে ক্ষতির মুখে পড়েছে। এর মধ্যে যেগুলো একদম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে তা পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে সড়কগুলো মেরামতের জন্য আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী বিনয় কুমার পাল বলেন, সওজের আওতাধীন কিছু সড়কে এখনো পানি রয়েছে। পানি পুরোপুরি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারব। প্রাথমিকভবে আনুমানিক ৪০ কোটি ৯৮ লাখ ৪৭ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :