ঢাকা শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

কুমিল্লায় বন্যায় সড়ক-ব্রিজ ও কালভার্টের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

এমদাদুল হক সোহাগ, কুমিল্লা
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৪, ০৩:৫৫ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

কুমিল্লা: ভয়াবহ বন্যার থাবায় কুমিল্লার ১৪টি উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানি কমতে শুরু করায় ক্ষতচিহ্ন ও ক্ষতির ভয়াবহতা ফুটে উঠছে প্রতিদিন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। তবে জেলার অনেক উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নয়ন হচ্ছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বড় আঘাত হানে, বিশেষ করে সড়কগুলো নষ্ট হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলীরা।

কুমিল্লা স্থানীয় সরকার বিভাগের বন্যা ও দুর্যোগ পরিস্থিতির দৈনন্দিন প্রতিবেদন অনুযায়ি ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কুমিল্লায় এক হাজার ৩৪ দশমিক ৬৭ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। নষ্ট হয়েছে ৩২টি ব্রিজ-কালভার্ট।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সায়েদুজ্জামান সাদেক বলেন, বন্যার সময় সড়কগুলো যতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বন্যার পানি কমার সময় তারচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কুমিল্লা জেলায় এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির সটিক পরিমান নিরুপন করা সম্ভব হয়নি। তবে ক্ষয় ক্ষতির পরিমান প্রতিদিনই ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। পানি কমতে শুরু করায় প্রতিদিনই ভেসে উঠছে নতুন নতুন এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, কালভার্ট ও ব্রিজ। তিনি আরো বলেন, ৩ সেপেটম্বর পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ি জেলার মেঘনা উপজেলায় ২৩ কিলোমিটার সড়ক ও দুটি ব্রিজ/কালভার্ট, হোমনা উপজেলায় ৪২.৬ কি.মি. ও ১টি ব্রিজ/কালভার্ট, দাউদকান্দিতে ৭ কি.মি. ও একটি ব্রিজ/কালভার্ট, তিতাসে ১৯ কি.মি. ও একটি ব্রিজ/কালভার্ট, মুরাদনগরে ৬.২১কি.মি, দেবীদ্বারে ৭০.১০ কি.মি, ব্রাহ্মণপাড়ায় ৭০.৬ কি.মি. ও ৬টি ব্রিজ/কালভার্ট, বুড়িচংয়ে ১৫০.৯ কি.মি, আদর্শ সদর উপজেলায় ২৪.৪ কি.মি, সদর দক্ষিণ উপজেলায় ৭৯.২ কি.মি ও দুটি ব্রিজ/কালভার্ট, লালমাই উপজেলায়৫৯.৮ কি.মি, বরুড়ায় ১১৯.৭ কি.মি এবং লাকসামে ১২৫.৫ কি.মি, মনোহরগঞ্জে ৭৮.৮কি.মি, চৌদ্দগ্রামে ১৯৩.১৫কি.মি ও ৯টি ব্রিজ/কালভার্ট, নাঙ্গলকোটে ৬৬.৬কি.মি ও ১০টি ব্রিজ/কালভার্ট, চান্দিনায় ১০.৮কি.মি সড়ক ক্ষতি হয়েছে। তিনি আরো জানান, এসব সড়কের সোল্ডার ধসে গেছে, অনেক স্তানে সড়ক ওয়াশআউট হয়েগেছে। ব্রিজ কালভার্টের এপ্রোচ ওয়াশ আউট হয়ে গেছে এবং কালভার্ট দেবে গেছে। সড়কে পটহোল তৈরি হয়েছে।

এদিকে, কুমিল্লা গোমতী নদীর পানি বিপদসীমার ২৬০ সে.মি নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে কুমিল্লায় এখনো পানির নিচে কয়েকটি উপজেলা। এক লাখ ৩৫ হাজার ৩৪২টি পরিবার এখনো পানিবন্দি হয়ে আছে। আশ্রয় কেন্দ্রে আছেন অর্ধলক্ষ মানুষ। জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, শুরুতে ৭২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র থাকলেও বর্তমানে ৪০৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে বানভাসীরা অবস্থান করছেন। বন্যায় ঘরবাড়ি হারিয়েছেন অন্তত এক লাখের বেশী পরিবার।