ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

হবিগঞ্জের ২৫০ শয্যা হাসপাতালটি চলছে ৫০ শয্যার জনবল দিয়ে

সায়েদুজ্জামান জাহির, হবিগঞ্জ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৪, ০৫:৩৭ পিএম

হবিগঞ্জের ২৫০ শয্যা হাসপাতালটি চলছে ৫০ শয্যার জনবল দিয়ে

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

২৫০ শয্যা হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতাল। জেলার ৯টি উপজেলার সাড়ে ২৩ লাখ মানুষের ভরসাস্থল। কিন্তু ডাক্তারের অভাবে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সেবা প্রার্থীরা। একটু জঠিল রোগী হলেই সিলেট কিংবা ঢাকা ছাড়া চিকিৎসা পাবার কোন সুযোগ নেই।

৫০ শয্যা নিয়ে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়। বিএনপি সরকারের আমলে শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালটিকে ১০০ শয্যার উন্নীত করা হয়। পরবর্তীতে বিগত সরকারের আমলে আবারও শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। শয্যা সংখ্যা বাড়ালেও বাড়েনি জনবল। যেমন সাইন বোর্ডে বেড়েছে শয্যা সংখ্যা ঠিক তেমনি বেড়েছে কাগজে-কলমে জনবল। মূলত হাসপাতালটি চলছে ৫০ শয্যার হাসপাতালের লোকবল নিয়ে।

২৫০ শয্যা হাসপাতালে ৫৭ জন চিকিৎস্যদের পদ রয়েছে। কিন্তু কর্মরত আছেন মাত্র ২২ জন। তন্মধ্যে ১০ জন সিনিয়র কন্সালটেন্টের মধ্যে আছেন মাত্র ১ জন, ১২ জন জুনিয়র কন্সালটেন্টের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ৩ জন। হাসপাতালে কনসালটেন্ট না থাকায় মেডিকেল অফিসাররা দায়সারা ভাবে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন। গাইনী, ই,এন,টি, কার্ডিওলজি, ইউরোলজী, নেফরোলজী, সার্জারী, অর্থোসার্জারী, শিশু,  চর্ম ও যৌন, চক্ষু, রেডিওলজিষ্ট, প্যাথলজি, মেডিসিন, মানসিক, গ্যাস্ট্রোলজি, রেজিস্টার ও মেডিকেল অফিসার (রক্ত) কোন সিনিয়র কলসানটেন্ট নেই। এমনকি সার্জারি ও শিশু বিভাগ ছাড়া কোন বিভাগে জুনিয়র কনসালটেন্টও নেই।

হাসপাতালটিতে কর্মরত আছেন ১জন তত্ব¡াবধায়ক ১জন সিনিয়র কন্সালটেন্ট ৩ জন জুনিয়র কন্সালটেন্ট ১৭ জন মেডিকেল অফিসার। এছাড়াও সেবক- সেবিকা, টেকনেসিয়ান সহ অনেক পদই দীর্ঘদিন যাবৎ অপুরনই রয়ে আছে। অপর্যাপ্ত চিকিৎসক, সেবক-সেবিকা আর অন্যান্য ষ্টাফ সংকট নিয়েই জেলা সদরের ২৫০ শয্যা আধুনিক সদর হাসপাতালটি খুঁড়িয়ে খুড়িঁয়ে চলছে দীর্ঘদিন যাবৎ। বক্তৃতার মঞ্চে হবিগঞ্জের মানুষ অনেক শুনেছে আমরা মেডিকেল কলেজ করেছি। ২৫০ শয্যা হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতাল করেছি। তবে হয়েছে কাগজে কলমে। আশ্বাস অঙ্গিকার কম হয়নি। কিন্তু বিরাজমান সমস্যা দীর্ঘ দিনেও অপূরণই রয়ে গেছে। 

হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালের জন্য ৮ তলা একটি ভবন নির্মাণ হলেও এর ৩টি তলায় শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম চলছে। এই ২৫০ শয্যা হাসপাতালে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ রোগী ভর্তি থাকলেও পাচ্ছেন না সঠিক চিকিৎসা সেবা।

এ বিষয়ে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আব্দুল মুমিন চৌধুরী কথা বললে তিনি রূপালী বাংলাদেশকে জানান, হাসপাতালটিতে একদিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংকট অন্যদিকে ২৫০ শয্যা হাসপাতাল ভবনে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের ক্লাস চলায় আগত রোগীদের আমরা জায়গা দিতে পারছি না। যার ফলে রোগীদের আত্মীয়-স্বজনের সাথে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রায়ই বাকবিতন্ডা হচ্ছে। ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ২২জন কন্সালটেন্ট এর জায়গায় মাত্র ৪জন কন্সালটেন্ট থাকায় আমাদের অনিচ্ছা সত্বেও রোগীদেরকে সিলেট অথবা ঢাকা প্রেরণ করতে হচ্ছে। আইন অনুযায়ী মেডিকেল কলেজের শিক্ষকরা নিকটস্থ হাসপাতালে সেবা প্রদান করার কথা। কিন্তু তারা কিছু সার্জারি ছাড়া আউটডোর এবং ইনডোরে কোন চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন না।

এ অবস্থায় জনবল কাঠামো অনুযায়ী হবিগঞ্জ জেলার সাড়ে ২৩ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তির ভরসাস্থল ২৫০ শয্যা হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালটিতে ডাক্তার ও স্টাফ নিয়োগ দিয়ে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার দাবী হবিগঞ্জবাসীর

আরবি/জেডআর

Link copied!