কয়লা এক ধরনের জৈব সেডিমেন্টারি বা পাললিক শিলা। অ-নবায়নযোগ্য শক্তির অন্যতম উৎস। মূলত কয়লা পুড়িয়ে তাপ উৎপন্ন করা হয়। এরপর সেই তাপকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হয় বিদ্যুৎ শক্তি। বর্তমানে পৃথিবী জুড়ে ফসিল ফুয়েল বা জীবাশ্ম জ্বালানি হিসেবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কয়লার ব্যবহার।
গাছ হাজার হাজার বছর মাটি চাপা থাকার পর পরিণত হয় কয়লায়। প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এই জ্বালানি। তবুও থেমে নেই কয়লার ব্যবহার পাশাপাশি একে ঘিরে বাণিজ্য । কয়লা তার মধ্যে বিদ্যমান প্রচুর শক্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে পরিচিত এবং ১৮৮০ সাল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এছাড়াও লোহা এবং সিমেন্ট শিল্পে কয়লার ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়।

ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাদদেশে অবস্থিত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কলমাকান্দা-দূর্গাপুর অংশে ৪০ কিলোমিটার সীমান্তের বিজয়পুর, বারোমারি, লেঙ্গুরা, কচুগড়া, বরুয়াকোণা, পাচগাঁও পয়েন্ট দিয়ে দিনে দুপুরে কয়লা প্রবেশ করছে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে।
সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, দুর্গাপুরের সীমান্ত চোরাকারবারিরা দূর্গাপুর ফায়ার সার্ভিস অফিসের সামনে, কলেজ রোড, পূর্ব বাজার, কামারখালি, চন্ডিগড় ইউনিয়নে অন্তত পাঁচ লক্ষ টন কয়লা মজুদ করে রেখেছে। আন্ত:সীমান্তবর্তী সোমেশ্বরী, মহাদেও নদী, সুনামগঞ্জ জেলার কিছু নদী হতে অবৈধভাবে কয়লা উত্তোলন করা হয়।

পরে এসব কয়লা নৌকা, লড়ি, পিকাপ ও ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করে চোরাকারবারিরা। এসব কয়লা পাচারের সাথে জড়িত চোরাকারবারিরা বস্তাপ্রতি কমিশন দিয়ে কতিপয় দূর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তার যোগসাজশে সারাদেশে সরবরাহ করে। এতে করে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে শতকোটি টাকার রাজস্ব থেকে। অন্যদিকে অপরিকল্পিতভাবে মজুদ করা এসব কয়লা স্তুপ থেকে যেকোন সময় অগ্নিকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটার ঝুঁকি রয়েছে।

এ ব্যাপারে দূর্গাপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, ভারত থেকে চোরাইপথে এসব কয়লা আসে। বিজিবি তাদের অভিযানে প্রায়শই এসব কয়লা আটক করে, আমরাও খবর পেয়ে অভিযান চালাই। অবৈধ কয়লা মজুদ পেলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নিব।