দেখতে বাচ্চাদের মতো হলেও ২৯" ইঞ্চি জহুরার বয়স প্রায় ১৩ বৎসর। মানবেতর জীবনযাপন করছে জহুরা খাতুন ও তার মা শাহানাজ বেগম (৩০)।
জহুরার মা শাহানাজ বেগমের প্রায় ১৫ বৎসর পূর্বে বিয়ে হয় মির্জাপুর উপজেলার লতিফপুর গ্রামের মো. জাকির হোসেনের কাছে। বিয়ের ২-৩ বছর পর জন্ম হয় জহুরার। পরে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে তার মা শাহানাজ বেগম। ভারসাম্যহীন হয়ে যাওয়ায় শাহানাজ বেগমকে তাড়িয়ে দেয় তার স্বামী। ফিরে আসে বাবার বাড়ি ছোট্ট জহুরাকে সাথে নিয়ে।
দিন দিন জহুরার বয়স বাড়লেও শারীরিকভাবে কোন উন্নতি নেই তার। তার বয়স যখন ৪ বছর তখন জহুরাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় তার নানা-নানি। ডাক্তারের নিকট নিয়েও কোন আশার আলো দেখেনি জহুরার মা-নানা-নানি। ডাক্তার তখন তাদের বলেছে জহুরা শারীরিকভাবে আর বৃদ্ধি হবে না। এদিকে তার মা শাহানাজ বেগমও মানসিক ভারসাম্যহীন হয়েই আছে। মেয়ে ও নাতনীর এমন পরিস্থিতি যেন কোন সুখ পাচ্ছে না জহুরার নানা-নানি।
জহুরা খাতুনের বর্তমান বয়স প্রায় ১৩ বছর। তার উচ্চতা ২৯ ইঞ্চি। মাঝে মাঝে বাচ্চাদের মত খেলাধুলা করে। মন চাইলে খাবার খায়, না চাইলে খায় না। গোসল একা একা করতে পারে, আবার অনেক সময় করিয়ে দিতে হয়। সবকিছু মিলিয়েই যে বয়সে জহুরার স্কুলে থাকার কথা, সে বয়সে জহুরা বাচ্চাদের মত খেলাধুলা করে।
জহুরা ও তার মাকে দেখলে মনে হয় পৃথিবীর সবকিছুই যেন তাদের বিপক্ষে চলে গেছে। তাদের সকল ধরনের চিকিৎসার খরচ বহন করেন জহুরার বৃদ্ধ নানা।
জহুরার নানার বাড়ি উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের বালিয়াজান দক্ষিণ পাড়া। তার নানা মো. শাহাজ উদ্দিন। শাহাজ উদ্দিন কৃষি কাজ করে তার সংসার চালায়। শাহাজ উদ্দিন তার ছেলেদের থেকে পৃথক সংসার করে। তাহারও যেন দুঃখের কোন শেষ নেই।
জহুরার নানা-নানি বলেন, ওদের যে অবস্থা,আমরা যখন মারা যাব তখন ওদের দেখার মত কেউ নাই! তাই ওদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আপনারা সকলেই ওদের পাশে থাকবেন।
আপনার মতামত লিখুন :