শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আজিজ আল ফয়সাল, ফেনী

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৪, ০৭:১৬ পিএম

ফেনীতে বন্যায় নিফাজ ফুডস‍‍’র কোটি টাকা জলে

আজিজ আল ফয়সাল, ফেনী

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৪, ০৭:১৬ পিএম

ফেনীতে বন্যায় নিফাজ ফুডস‍‍’র কোটি টাকা জলে

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ফেনী ছাগলনাইয়া নিজকুঞ্জরা বিসিক শিল্পনগরীতে ভয়াবহ বন্যায় নিফাজ ফুডস ইন্ডাস্ট্রির কোটি টাকার মতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তৈরি করা পন্যসামগ্রী ও উন্নত মানের মেশিনগুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

জানা যায়, ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু হয়। সুনামের সাথে প্রতিষ্ঠানটি মানুষের মাঝে আস্থা অর্জন করে আসছিল। ভয়াবহ বন্যায় প্রতিষ্ঠানটির কাঁচামাল ও মেশিনারিজ জিনিসপত্র লন্ডভন্ড করে দেয়। মেশিনের মধ্যে কম্প্রেসার, স্পাইডার মিক্সচার, কেক ডিপোজিটর, কুকিজডিপোজিটর, সার্বমটর ও বিস্কুট রোটার এসব উন্নত মানের মেশিন বিকল হয়ে যায়। প্রতিষ্ঠানে ৫০ থেকে ৭০ জন শ্রমিক কাজ করে। তন্মধ্যে নারী শ্রমিক রয়েছে ১১জন। প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে তারা বেকার হয়ে যাবে। একদিকে শ্রমিকদের আত্মনাত। অন্যদিকে মালিকের সর্বনাশ।

নিজকুঞ্জরা বিসিক শিল্প নগরীতে সরে জমিনে গেলে নিফাজ ফুডস ইন্ডাস্ট্রির ক্ষয়ক্ষতির দৃশ্য দেখা যায়।

নিফাজ ফুডস‍‍’র  ক্ষয়গ্রস্ত যন্ত্রপাতি। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

এ সময় নিফাজ ফুডসের নারী শ্রমিক ফাহমিদা আক্তারের সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, ফেনীতে ঝড় তুফান হয়েছে তা দেখেছি। কিন্তু বন্যা হতে দেখিনি, বন্যায় সব কেড়ে নিলো। আমি নিফাজ ফুডসে দীর্ঘদিন কাজ করছি। স্বামী তাড়িয়ে দেয়ার পর থেকে এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছি। আমার একটা সন্তান আছে। আমি ছাড়া আমার সন্তানের কেউ নেই। প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে গেলে এখন কোথায় যাবো। না খেয়ে মরতে  হবে।

প্রতিষ্ঠানের বিস্কুট কারীগর ইব্রাহিম খলিল জানান, যখন বন্যা শুরু হয়েছে ওইদিন আমাদের ছুটির দিন ছিলো। শ্রমিকরা না থাকাতে কাঁচামাল, তৈরিকৃত মালামাল ও মেশিনগুলো সরাতে পারিনি। ৮০ ভাগ মেশিন বিকল হয়ে যায়। আর ২০ শতাংশ আংশিক ক্ষতি হলে সেগুলো মেরামত করে কাজ করছি। আগের মতো মাল প্রডাকশন দিতে পারছি না।এতে বাজরে চাহিদা মতে মাল সাপ্লাই ঠিক মতো দিতে পারছি না। মালিক প্রতিদিন লোকসানে আছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের বেতন নিয়ে তিনি দুশ্চিন্তা রয়েছে।

এ ব্যাপরে নিফাজ ফুডসের ম্যানেজার মজিবুর রহমান জানান, বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফেক্টরির মধ্যে প্রায় ৪ থেকে ৫ ফুট পানি উঠেছে।এতে তেল, চিনি, আটা, ময়দাসহ তৈরীকৃত পণ্য পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ৫০ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়। অন্যদিকে পণ্য তৈরী করতে ওভেন, ডিভাইডার মটরসহ ইলেকট্রনিক সামগ্রী ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। য়ার পরিমাণ ৫০ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় কোটি টাকার মতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রতিষ্ঠানটি এখন দেওলিয়ার পথে। প্রতিমাসে গ্যাস বিদ্যুৎ ও শ্রমিকের বেতন পরিশোধ না করতে পারলে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া ছাড়া উপায় নেই বলে জানান তিনি।

নিফাজ ফুডসের প্রোপাইটার ফজলুল করিম মহসিন রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, গত ২১ আগস্ট ভারত থেকে নেমে আসা পানি পুরো নিজকুঞ্জরা বিসিকসহ চারপাশে বিস্তৃন্ন পানি দেখা গেছে। এ বিসিক শিল্পনগরী একপর্যায়ে পানির নিচে তলিয়ে যায়। এতে কলা গাছের ভেলা চলতে দেখা যায় । সকল শিল্প কারখানা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে আমারও প্রায় কোটি টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়।

নিফাজ ফুডস‍‍’র  ক্ষয়গ্রস্ত যন্ত্রপাতি। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

তিনি বলেন, প্রায় ২০ বছরের মতো এ প্রতিষ্ঠানটি হাটি হাটি পায়ে পায়ে এ পর্যন্ত নিয়ে আসছি। মানুষের আস্তার যায়গা পেয়েছি। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার আমলে রাজনৈতিক রশনালয় বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়। পরে সেটি কেটে উঠি। ব্যাংক লোন নিয়ে আবার ফেক্টরি চালু করি। এরপর ছাত্র আন্দোলন শুরু  হলে তৈরি করা পণ্য জমাট হয়ে পড়ে। বন্যায় ওইসব পন্য এবং যাবতীয় মেশিনারি নষ্ট হয়ে যায়। এতে কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়।

বন্যায় ফেনীতে হাজার হাজার কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তন্মধ্যে উৎপাদন খাতে কারখানা গুলোতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে প্রায় ৫ থেকে ১০ কোটি টাকার মতো  ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

আরবি/জেডআর

Link copied!