ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে সফল কৃষকরা

মো. বাবুল মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৪, ০৬:৩০ পিএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে সফল কৃষকরা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

প্রথমবারের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে মৌসুমের বাইরেও গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে সফলতা পেয়েছেন কৃষকরা। এ রঙিন তরমুজ স্বল্পখরচে ও কম যত্নে চাষযোগ্য, বছরে দুবার ফলন পাওয়া যায় এবং বাজারমূল্য বেশি পাওয়ায় এ তরমুজ চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। এ তরমুজ চাষে বীজসহ সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছে কৃষি অফিস।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, নবীনগর উপজেলায় এই বছর প্রায় ২ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ আবাদ হয়েছে। বিশেষ করে এবারে সূর্যডিম ও বাংলালিংক জাতের তরমুজের চাহিদা বেড়েছে। পুকুর পাড়সহ যে কোনো পরিত্যক্ত স্থানে তরমুজ আবাদের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে কৃষি বিভাগ।

সরেজমিনে দেখা যায়, ফুড রিকন্সট্রাকশন ইমারজেন্সি এসিস্ট্যান্স প্রজেক্টের উপজেলার বীরগাঁও, নাটঘর, বগডহর এলাকায় মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজের চারা রোপণ করা হয়। ফলে পোকামাকড় আর গাছের গোড়ায় আগাছা নিয়ন্ত্রণে তেমন বাড়তি পরিচর্যা করতে হচ্ছে না কৃষকদের।

নাটঘর ইউনিয়নের বড়হিত গ্রামের কৃষক শামীম আহমেদ জানান, সাধারণত শীতকালে আবাদ করে মার্চ-এপ্রিল মাসে মাঠ থেকে তরমুজ তোলা হতো। বর্তমানে কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগিতায় উন্নতমানের সূর্যডিম জাতের তরমুজ আবাদ করেছি। ২০ শতক জমি থেকে ইতিমধ্যে ৯২ হাজার টাকা তরমুজ বিক্রি করেছি। আরও ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করার সুযোগ আছে। কম যত্নে অল্প সময়ে এই ফসল আবাদ হয় বলে এলাকায় অনেক কৃষক আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এ বিষয়ে স্থানীয় উপসহকারী কৃষি অফিসার নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন।

বগডগর গ্রামের কৃষক আবদুস ছালাম বলেন, পরিত্যক্ত অনাবাদি জায়গায় কৃষি অফিসের পরামর্শে প্রথমবারের মতো গ্রীষ্মকালীন তরমুজ আবাদ করেছি। মৌসুম ছাড়া তরমুজ আবাদের ধারণা আমার জন্য নতুন। খুব কম যত্নে এখন পর্যন্ত ভালো ফলন এসেছে। আগামীতে আরও বেশি জমিতে বড় পরিসরে এই তরমুজ চাষের ইচ্ছে আছে।

নবীনগর পূর্ব ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আবু নোমান জানান, অসময়ে এই ধরনের ফসল আবাদের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিটি তরমুজ ২-৩ কেজি ওজনের হচ্ছে, বাজার মূল্যও বেশ ভালো।

এ ব্যাপারে নবীনগর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম লিটন রুপালী বাংলাদেশকে জানান, বাংলাদেশের কৃষি পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে অভিযোজনের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে। এই তরমুজ তারই ফল। মাত্র ৬০-৬৫ দিনের মধ্যেই এ জাতের তরমুজ বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে। গ্রীষ্মকালীন তরমুজ আবাদ কৌশল সম্পর্কে আমরা মাঠ দিবস এবং কৃষক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হাতে-কলমে শিখিয়ে দিচ্ছি।

বর্তমানে এটি টেকসই আবাদ হিসেবে অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। কৃষকদের গ্রীষ্মকালীন তরমুজের বীজ, মালচিং পেপার ও পরিচর্যা বাবদ আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। তাই উপজেলায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। ফল হিসেবে তরমুজের চাহিদা রয়েছে অনেক। তরমুজে ৯২ শতাংশই পানি। শরীরে পানি ও তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষা করে। মস্তিষ্ক সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তরমুজের ক্যারোটিনয়েড দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতেও ভীষণ সহায়ক।

আরবি/জেডআর

Link copied!