ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

শহীদ আবু সাঈদের বীরত্বগাঁথা আলোকচিত্র প্রদর্শন

পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪, ০৫:১২ পিএম

শহীদ আবু সাঈদের বীরত্বগাঁথা আলোকচিত্র প্রদর্শন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

এমনিতেই কথা বলে ছবি, ব্যাখ্যার দরকার হয় না। একটি ছবি হাজার শব্দের গাঁথুনির চেয়েও শক্তিশালী ও মুর্তমান ছবি যত সহজে বিষয়বস্তুকে জীবন্ত করে তুলতে পারে, ভাষা তেমনভাবে পারে না। একটি ছবি অনেক কথা বলে, তেমনি অনেক ছবি একত্রিত হয়ে বহু কথা বলতে পারে। জানাতে পারে নানা ধরনের সমসাময়িক ঘটনা। তেমনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র  আবু সাঈদের সাহসী আত্মত্যাগে  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পায় ভিন্ন মাত্রা। আর সেই আত্মত্যাগের জন্য আবু সাঈদ হয়ে ওঠেন গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক। অমরত্ব পাওয়া আবু সাঈদের জীবনের সেরা সময়কে ছবির অবয়বে ধরে রেখে আরেক ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলেন ফটো সাংবাদিক আদর রহমানও।

ওই সময় আবু সাঈদের তোলা ছবি নিয়ে আরও একটি এক প্রদর্শনী হলো  রংপুরের পীরগঞ্জে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতি সংঘের তত্ত্বাবধানে  জাফরপাড়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে। শহীদ আবু সাঈদ ম্মৃতি সংঘের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীর শেষ দিনে দর্শনার্থীর ভিড় ছিল উপচে পড়া। এদিন সকাল থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ভিড় করেন  আবু সাঈদের নিজ বিদ্যালয় জাফরপাড়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে । দুই দিনের এই আয়োজনে কয়েক হাজার  শ্রেণী পেশার মানুষ ও শিক্ষার্থী প্রদর্শনী দেখতে আসেন।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টা থেকে শুরু হয়ে প্রদর্শনী চলে গতকাল সোমবার রাত পর্যন্ত। প্রদর্শনীটি ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন শহীদ আবু সাঈদ এর বাবা মকবুল হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শহীদ আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন। শিক্ষার্থী থেকে রিকশাচালক, শিশু-কিশোর থেকে বিভিন্ন পেশাজীবীরাও আগ্রহের সঙ্গে প্রদর্শনীতে আসেন।  প্রদর্শণী দেখতে আসা কলেজের ছাত্রী  লাভলী বেগম বলেন, বলতে চাইলে তো অনেক কিছু বলা যায়  সংক্ষেপে একটু বলতে চাই। আমাদের দেশের হাসিনা সরকারের মানুষের প্রতি যে নির্যাতন করেছে আয়না ঘরের মাধ্যমে এরূপ চিত্র যেন আমাদের আর দেখতে না হয়। আমরা একটা সুন্দর দেশ চাই। 

প্রদর্শনী দেখতে আসা ছাত্র লেমন বাবু বলেন, আবু সাঈদকে গুলি করার দৃশ্য টিভিতে দেখেছি। প্রদর্শনীতে এসে নিজের চোখে দেখলাম। তবে এ ধরনের প্রদর্শণী বাংলাদেশের সব জেলা ও  উপজেলায় করা দরকার । প্রদর্শনী উদ্বোধনে শহীদ আবু সাঈদ এর বাবা মকবুল হোসেন কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন,শহীদ আবু সাঈদ এর বাবা মকবুল হোসেন বলেন, আমার ছেলেকে যারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে তাদের বিচার যেনো হয়। 

শহীদ আবু সাঈদ এর বড় ভাই আবু হোসেন বলেন, এই ছবিগুলো অপরাধীদের শনাক্ত করতে সহায়তা করবে এবং যারা আমার ভাইকে যেভাবে নির্যাতন করার পর গুলি করে হত্যা করেছে তাদের বিচারের দাবী জানান। ফটো সাংবাদিক আদর রহমান বলেন, আমি ১৬ জুলাই  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাড়ে ৩’শ ছবি তুলেছি এর মধ্যে বাচাইকৃত ৫০ টি ছবি  নিয়ে প্রদর্শণী করছি। সেদিন  অনেক ঝুঁকি নিয়ে ছবি গুলো তুলেছি । 

তিনি আরো বলেন, আমরা শুধু আবু সাইদের বুক চিতিয়ে থাকার সময় তার বুকে গুলি চালানোর ভাইরাল ছবিটি দেখেছি। কিন্তু আবু সাঈদকে গুলি করা করার আগে পুলিশ কিভাবে তাকে বেধড়ক লাঠি পেটা করেছিল, সে ছবি গুলো কেউ দেখেনি।  মুলত এই প্রদর্শনী আবু সাঈদের গুলি করার আগে ও পরের ছবি প্রদর্শন করা হয়েছে। যদি আবু সাইদ কে নিয়ে এক’শ বছর পরেও গবেষণা করা হয় তাহলে হয়তো এই ছবি গুলোই যথেষ্ট হবে।

আরবি/জেডআর

Link copied!