ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

হরিরামপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের রমরমা ঘুষ বাণিজ্য

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪, ১১:১৫ পিএম

হরিরামপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের রমরমা ঘুষ বাণিজ্য

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

মানিকগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ হরিরামপুর জোনাল অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে রমরমা ঘুষ বাণিজ্য ও লাইন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এমনকি ফাইলের মধ্যে টাকা না দিলে, ফাইল ছুড়ে মারারও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, হরিরামপুর উপজেলায় আবাসিক ও শিল্প- বাণিজ্য লাইনের আবেদন পরলেই লোভে চকচকে হয়ে,ওঠে কর্মকর্তা- কর্মচারীদের চোখ। টাকার জন্য শুরু হয় গ্রাহককে নানা রকম হয়রানি। পান থেকে চুন খসলেই গ্রাহকের গলায় পারা দিয়ে নানা কৌশলে হাতিয়ে নেন লক্ষ লক্ষ টাকা । এ যেনো মামা বাড়ির আবদার, টাকা না দিলে মেলে না কোনো সেবা।

উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের ইলেকট্রিশিয়ানদের দালাল বানিয়ে মানুষের রক্ত ঘাম করা টাকা শুষে নিচ্ছে তারা।

আরও জানা যায়, ওয়ারিং ইন্সপেক্টর গোলাম মোর্তুজার করা সিন্ডিকেটের বাইরে কোন কাজ করা হয় না ওই অফিসে। তার সাথে সম্পর্ক থাকলে টাকার বিনিময়েও পল্লী বিদুৎ সমিতি লস করেও তারা লাইন নির্মাণসহ নানা ধরনের সেবা দিয়ে থাকেন। গ্রাহক সদস্য ফরমের মূল্য ৫০ টাকা থাকলেও নেওয়া হয় ৫০০/১০০০ টাকা।

এছাড়া, ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে সোলার প্যানেল না থাকলে ও বহুতল ভবনের থ্রি ফেইজ লাইন নির্মাণ, শিল্প এবং বাণিজ্যিক লাইনের জন্য দিতে হয় ১ থেকে ২ লক্ষ টাকা। এমনকি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের লাইনের জন্যেও ঘুষ দিতে হয় ইন্সপেক্টর গোলাম মর্তুজাকে।

ঝিটকা আবির মেডিকেল সেন্টারের মালিক ডা. হালিম বলেন, আমার এই ভবনের বিদ্যুৎ লাইনের জন্য খুব হয়রানি হয়েছি৷ লাইন নির্মাণ করতে সোলার প্যানেলের জন্য খরচ হয়েছে ১ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা। আর পল্লী বিদুৎ সমিতি হরিরামপুর জোনাল অফিসে দিতে হয়েছে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা।

ঝিটকা আবির মেডিকেল সেন্টারের মো. শহিদুল ইসলাম বাবু ও রেজা বলেন, শুধু ১লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা দিয়েছি অফিসে। আর ডিজিএম এর নিকট পৌঁছে দিতে হয়েছে ১৫ হাজার টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইলেকট্রিশিয়ান বলেন, ইন্সপেক্টর মর্তুজা স্যার টাকা না দিলে কোন কাজ করেন না। ওই অফিসটার সব থেকে বড় ঘুষ খোর ওই ইন্সপেক্টর। পল্লী বিদ্যুৎ এর সদস্য ফরম যার মূল্য ৫০ টাকা, মর্তুজা স্যার তো ৫০০ টাকার কম দিলে নেয় না। কারো কারো কাছে থেকে ১০০০ টাকাও নিয়ে থাকেন তিনি। আর লাইন নির্মাণের ওয়ারিং পরিদর্শন করতে গেলে লাইন বুঝে টাকা নিয়ে থাকেন তিনি।

ব্যবসায়ী মীর নাসির বলেন,কেউ তো সোলার প্যানেল লাগায় না। সরকারি নিয়ম থাকলেও কেউ সোলার প্যানেল লাগায় না।পল্লী বিদ্যুতের লোকজন আমার কাছ থেকে সোলার প্যানেল হাওলাত নিয়ে দেখাইয়া ছবি তুলে লাইন দিয়েছে। তাদের কাছে থেকে অনেক টাকা নিয়েছে। শুধু আমার বাসার উপরের টাওয়ার কোম্পানির কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা নিয়েছেন।

হরিরামপুর জোনাল অফিসের ওয়ারিং ইন্সপেক্টর মর্তুজার সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে বারবার ফোন কেটে দিয়ে একাধিক লোককে দিয়ে প্রতিবেদককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি হরিরামপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম সামিউল কবির বলেন, এমনটা করার কোনো সুযোগ নাই। যে বলবে তাকে প্রমাণ করতে হবে।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. সুলতান নাছিমুল হকের সাথে একাধিকবার মুঠোফোন যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি ।

আরবি/জেডআর

Link copied!