শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আব্দুল হান্নান আকন্দ, গাইবান্ধা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪, ০৮:২৯ পিএম

‘রাইগ্রাম যেন হিরোইন পল্লী’

আব্দুল হান্নান আকন্দ, গাইবান্ধা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪, ০৮:২৯ পিএম

‘রাইগ্রাম যেন হিরোইন পল্লী’

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌর এলাকার রাইগ্রাম যেন ‘হিরোইন পল্লীতে’ পরিনত হয়েছে। প্রায় ত্রিশ বছর পূর্বে এই গ্রামে সর্ব প্রথম আব্দুল জোব্বার নামে স্থানীয় ইউনিয়ন
পরিষদের (ইউপি) এক সদস্য শুরু করেন মাদকের কারবার।

জানা গেছে, ২০০১ সালে আব্দুল জোব্বার ব্যাপক ভোটে স্থানীয় ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। তার মুল পেশা ছিল হিরোইন ব্যবসা। তিনি এলাকায় বিয়ে সাথীসহ নানা উন্নয়ন মুলক কাজে সহযোগিতা করতেন। এমনকি নিজ অর্থায়নে হতদরিদ্র মেয়েদের বিয়ে দিতেন। এতে ছোট-বড় সবাই সাথে তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই এক
পর্যায়ে ঘরে ঘরে মাদক ব্যবসার বিস্তার ঘটে। এমনকি তার মৃত্যুর পর বংশানুক্রমিক সন্তানেরা মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৮ সালে মে মাসে মৃত আব্দুল জোব্বারের ছেলে মাদক সম্রাট রাজু মিয়া র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে আইনশৃংখলা বাহিনীর অভিযানে মাদক ব্যবসায়ীদের আটক করলেও তারা জামিনে এসে পুনরায় মাদক ব্যবসা শুরু করে। বর্তমানে ফেনসিডিল ও গাঁজার পাশাপাশি হিরোইন বিক্রির ঘাটি হয়ে উঠেছে গ্রামটি। সেই থেকেই গ্রামটি উত্তরাঞ্চলজুড়ে ‘হিরোইন পল্লী’ হিসেবে কুখ্যাতি অর্জন করেছে।

এখন রাইগ্রাম যেন ‘হেরোইন পল্লী’ নামে পরিচিত। এতে ওই গ্রামের সাধারণ বাসিন্দাদের অবর্ণনীয় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। নানা প্রতিকুল পরিস্থিতির শিকার
হতে হচ্ছে গ্রামের বাসিন্দাদের। রাইগ্রামের নাম শুনলেই ভেঙ্গে যায় বিয়ে। কারণ কেউ সন্তানদের এ গ্রামে বিয়ে দিতে চান না। গ্রামের তরুণদের চাকরি পেতেও যেন
ভোগান্তির শেষ নেই।

তাদেরই একজন ইসাহাক আলী (৫৫) পেশায় মেকানিক। রিকশাভ্যান-ইজিবাইক মেরামত করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি দাম্পত্য জীবনে ৪ সন্তানের জনক। ছোট মেয়ে মাসুদার বিয়ে দিতে পড়তে হয়েছে চরম বিপাকে। গত ১৫ আগস্ট মেয়ের বিয়ে সম্পন্ন হয়। কিন্তু এর আগে বিয়ে ভেঙেছে অন্তত শতবার। একই পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে অপরসন্তানদের ক্ষেত্রেও। তিনি জানান, অত্র গ্রামবাসীর সঙ্গে কেউ আত্মীয়তা করতে চান না। অনেক চেষ্টার পর মেয়ের বিয়ে হয়েছে। বর হেলাল মিয়ার বাড়ী পার্শ্ববর্তী গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায়। তিনি রাজধানীর একটি পোষাক কারখানায় চাকুরী করেন। একই গ্রামের ইব্রাহিম মিয়া (৩৮)পেশায় একজন যাত্রীবাহী পরিবহন চালক। তিনি সম্প্রতি অরিন পরিবহনে চালকের চাকুরির জন্য কোম্পানীর কার্যালয়ে যান। এসময় কর্তৃপক্ষ তার লাইসেন্স সহ যাবতীয় বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। কিন্তু বাড়ির ঠিকানা জানার পর তাকে আর চাকুরি দেয়া হয়নি। তাকে গাড়ি চালানোর ফাঁকে মাদক পরিবহন করবেন সন্দেহে নিয়োগ থেকে বঞ্চিত করা হয়।

পলাশবাড়ী পৌরসভার ২ নম্বর প্যানেল মেয়র আসাদুজ্জামান শেখ ফরিদ ‘রুপালী বাংলাদেশ’কে জানান, এলাকায় একাধিকবার সভা সমাবেশ করে মাদকের আস্তানা ভাংচুর করে পুড়ে দেয়া হয়। এরপরও ব্যবসা বন্ধ না হওয়ায় এ নিয়ে উপজেলা আইনশৃংখলা কমিটির সভায় অনেকবার কথা বলেছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়না।বরং এ নিয়ে উল্টো বিপদে পড়তে হয়েছে।

জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আবু নায়েম মো. কাজী নূরন্নী ‘রুপালী বাংলাদেশকে’ জানান, রাইগ্রামে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করে
মাদকদ্রব্য উদ্ধারসহ মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু তারা আইনের ফাঁকে বেরিয়ে এসে পুনরায় ব্যবসা শুরু করায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন মাদকের বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্সের কথা জানিয়ে “রুপালী বাংলাদেশ”কে বলেন, ওই গ্রামের মানুষদের সচেতন
করতে সভার কাজ চলছে। স্বল্প সময়ের মধ্যেই গ্রামটি মাদকমুক্ত হবে বলে আশা করেন তিনি।

আরবি/জেডআর

Link copied!